যান্ত্রিক জীবনে
মানুষ সবসময় আপন কর্মে ব্যস্ত থাকেন জীবন-জীবিকার টানে। পরিবার পরিজন নিয়ে একটুখানি
সুখের আশায় হাজারো কষ্ট বুকে চাপা দিয়ে দিন-রাত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন। সময় কোথায় নিরিবিলি
পরিবারকে নিয়ে একটুখানি সময় কাটানোর। মনটাকে একটু প্রকৃতির সান্যিধ্যে নিয়ে নির্মল
করার। ঈদ এলেই আসে সেই সুবর্ণ সুযোগ। একটুখানি সুখের জন্য পরিবারকে একান্তে সময় দেয়ার
জন্য ঈদের ছুটি সেই সোনার হরিণের পেছনে প্রাণান্ত ছোটাছুটি। হাতে গোনা ক’দিনের ছুটি শেষে
আবার ফিরে যাওয়া সেই যান্ত্রিক জীবনে।
ঈদুল ফিতর উপলক্ষে
ছুটিতে হাজার হাজার পর্যটকের সমাগম ঘটেছে মিরসরাইয়ের দর্শনীয় স্থানগুলোতে। ঈদের দিন
থেকে ঈদের তৃতীয় দিন পর্যন্ত মিরসরাইয়ের মুহুরী প্রজেক্ট, মহামায়া লেক, আরশীনগর ফিউচার
পার্ক, খৈয়াছরা ঝর্ণা, বঙ্গবন্ধু শিল্পনগর উপকূল, মধুরিমা রিসোর্ট, ডোমখালী বেড়িবাঁধসহ
বিভিন্ন বিনোদনকেন্দ্রে উপচে পড়া ভিড় দেখা যায় বিনোদন প্রেমীদের।
সরেজমিনে গিয়ে
দেখা যায়, ঈদের আনন্দকে দ্বিগুণ করতে এখানকার প্রায় প্রতিটি পর্যটন ও বিনোদন কেন্দ্রে
মানুষের ঢল নেমেছে। ঈদের লম্বা ছুটি ও নির্মল প্রাকৃতিক পরিবেশে দল বেঁধে দর্শনার্থীরা
যেন হুমড়ি খেয়ে পড়েছে দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম মহামায়া লেক ও মুহুরী প্রজেক্টে। এছাড়া
খৈয়াছরা ও রুপসি ঝর্ণা, ডোমখালী বেড়িবাঁধ, মধুরিমা রিসোর্ট, বঙ্গবন্ধু শিল্পনগর উপকূল
ও আরশি নগর ফিউচার পার্কে মানুষের ঢল নেমেছে ঈদের পরদিন থেকেই। নারী-পুরুষ, শিশু-কিশোর
সকলে এক সারিতে মিলে ঈদ আনন্দ উপভোগ করছে। নারীরা একই ডিজাইনের ও রংয়ের শাড়ীতে, পরুষরাও
একই ডিজাইনের পাঞ্জাবীতে, কেউ পারিবারিকভাবে, কেউ আবার সাংগঠনিকভাবে একই ধরণের পোষাকে
নিজেদের আবৃত করেছেন। তবে ভালো লাগার বিষয় পর্যটন কেন্দ্রগুলো একই পোষাক ধারীদের আলাদা
করে চেনা যায়। ঈদকে কে কিভাবে উপভোগ করছে কেবল পর্যটন কেন্দ্রগুলোতে গেলে দেখা যায়।
কেউ নদীতে নৌকায় চড়ছেন, কেউ নাগোর দোলায়, কেউ আবার লাউড স্পিকার বাজিয়ে দল বেঁধে নাচে-গানে
উল্লাসে মেতে উঠেছেন।
মুহুরী প্রজেক্টে
ঘুরতে আসা মাহবুব পলাশ ও সানোয়ারুল ইসলাম রনি বলেন, প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি
মিরসরাইয়ের বিভিন্ন দর্শনীয় স্থানগুলো নান্দনিক। তাই ঈদের ছুটিতে পরিবারের সবাইকে নিয়ে
এখানকার বিনোদন কেন্দ্রগুলো ঘুরে দেখতে এসেছি। আরশি নগর ফিউচার পার্কে চট্টগ্রাম থেকে
বেড়াতে আসা সুমন-শান্তা দম্পতি জানান, মিরসরাইয়ে একাধিক পর্যটন কেন্দ্র থাকায় সিডিউল
করে বিভিন্ন স্থানে বাচ্চাদের নিয়ে ঘুরতে এসেছি। নিরাপত্তা থাকায় নির্মল পরিবেশ বাচ্চারাও
ঈদের আনন্দ দারুন ভাবে উপভোগ করছে।
মিরসরাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহফুজা জেরিন বলেন, এবারের ঈদের লম্বা ছুটিতে হাজার হাজার মানুষ ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করতে ছুটে আসেন মিরসরাই পর্যটন স্পট গুলোতে। আর এই পর্যটকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে মিরসরাই থানা পুলিশ ও জোরারগঞ্জ থানা পুলিশ সর্বদা কাজ করে যাচ্ছেন। এছাড়াও প্রশাসনের বাড়তি নজরদারি রয়েছে।
- নাছির উদ্দিন/মিরসরাই
মন্তব্য করুন