ঋতুরাজ বসন্তের আগমনী মাস ফাল্গুন, যার কাব্যিক কোমল রূপান্তর ‘ফাগুন’, সে মাসের নাম ধারণ করেই ফাগুন টেলিভিশনের যাত্রা শুরু হল। তাই ফাগুন টিভি বসন্তের সব রূপ রঙ রস নিয়ে রঙ্গমঞ্চে আবির্ভূত হয়ে সার্থকনামা হতে চায়। আমাদের শিল্প সাহিত্য সংস্কৃতি শিক্ষা এবং জনজীবনের অন্যান্য নানা ক্ষেত্রে শৈত্যজড়তা বদ্ধতা বন্ধ্যাত্বের যে-পরিবেশের সৃষ্টি হয়েছে, ফাগুন টিভি তার মধ্যে দিয়ে বইয়ে দিতে চায় নবজাগরণ নবসৃজনের দখিন হাওয়া। প্রতিকূলতা প্রতিবন্ধকতার হিমেল কনকনে উত্তুরে হাওয়ার ঝাপটায় যেসব গর্বোন্নত বৃক্ষের পাতাপত্রালী ঝরে রিক্ত হয়ে গেছে, ফাগুন টিভি আবার তাদের পত্রেপল্লবে ফুলেফলে ভরে দিতে চায়। যেসব উজ্জ্বল সম্ভাবনা অঙ্কুরে বিনষ্ট হয়েছে, তাদের পুনরুজ্জীবিত করতে চায় পূর্ণ মহিমায়।
প্রকৃতপক্ষে, ফাগুন মাস তথা বসন্ত ঋতুর সঙ্গে বাংলাদেশের প্রকৃতির তথা বাঙালির অন্তর্লোকের একটা পুনরুজ্জীবন বা পুনর্জাগরণের সম্পর্ক অনাদিকালের। বাঙালি সত্তার নবজাগরণ তথা স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের সঙ্গে এ সম্পর্ক আরো সুস্পষ্ট। মাতৃভাষার জন্যে আন্দোলন ও আত্মত্যাগের মধ্যে দিয়ে বাঙালি চেতনার পুনর্জাগরণের সূচনা হয়েছিল ফাল্গুনে। ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি, যেদিন মাতৃভাষাকে রাষ্ট্রভাষা করার দাবিতে ঢাকার রাজপথে মিছিল করতে গিয়ে সালাম রফিক বরকত প্রমুখ বাঙালি তরুণ পুলিশের গুলিতে প্রাণ হারান, এবং তাঁদের শাহাদত বরণের স্মৃতিবাহী যেদিনটি বর্তমানে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের মর্যাদা অর্জন করে বাঙালি জাতি হিসেবে আমাদের গৌরবান্বিত করেছে, বাংলা বর্ষপঞ্জী অনুযায়ী সেই তারিখটি ছিল ৮ ফাল্গুন। পূর্ণ স্বাধীনতা অর্জনের লক্ষ্যে বাঙালি যেদিন নবউপনিবেশিক স্বৈরশাসনের বিরুদ্ধে সশস্ত্র সংগ্রামে অবতীর্ণ হয়, যে দিনটিকে আজ আমরা মহান স্বাধীনতা দিবস হিসেবে উদযাপন করি, সেই ২৬ মার্চও বাংলা পঞ্জিকায় বসন্তের দ্বিতীয় মাস চৈত্রের ১২ তারিখ। যুগের নিয়ম মেনে যতই আমরা বাহ্যত একুশে ফেব্রুয়ারি আর ছাব্বিশে মার্চ মাতৃভাষা দিবস আর স্বাধীনতা দিবস উদযাপন করি না কেন, আমাদের অন্তর্লোকে আমরা ঠিকই জানি, আমাদের জাতীয় চেতনার বহিঃপ্রকাশ ঘটানো এ দু’টো তারিখ হল বসন্তের জাগরণী প্রেরণায় সমুদ্ভাসিত আটই ফাল্গুন আর বারোই চৈত্র।
বায়ান্নর বসন্ত থেকে একাত্তরের বসন্ত -- প্রায় দু’দশক ধরে বাঙালি জাতির এই আত্মোপলব্ধি ও আত্মপ্রতিষ্ঠার অন্দোলন-সংগ্রামে নেতৃত্ব দিয়েছেন ইতিহাসের মহানায়ক, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। প্রকৃতপক্ষে. বাঙালি জাতির পুনর্জাগরণ বা পুনরুজ্জীবনে বঙ্গবন্ধুর যুগন্ধর ভূমিকাকেই ফাগুন টিভি তার দিকনির্দেশক আলোকবর্তিকা বলে মনে করে। জাতির জনকের স্বপ্ন ও নির্দেশনার হাত ধরে ফাগুন টেলিভিশন জাতিকে নিয়ে যেতে চায় আরেক বসন্তের সঞ্জীবনী উদ্যানে।
ফাগুন টেলিভিশন আটই ফাল্গুন আর বারোই চৈত্রের চেতনাকে, ভাষা আন্দোলন ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে আমাদের জীবনের ব্যক্তিগত পারিবারিক সামাজিক জাতীয় প্রতিটি স্তরে পুনরুজ্জীবিত করতে চায় শিক্ষা সাহিত্য সঙ্গীত নাট্যকলা ক্রীড়াজগৎ ইতিহাস ঐতিহ্য সংস্কৃতি অর্থনীতি ইত্যকার নানা বিষয় ও দিকের উপস্থাপনার মধ্যে দিয়ে।
ফাগুন টিভি তার প্রতিটি প্রযোজনা পরিবেশনাকে সাজাবে ফাল্গুনের মতোই বর্ণের অপার ঐশ্বর্য ও মাধুরীতে। ফাগুন টিভি তার সমস্ত গান ছন্দে বাঁধবে ‘ফাগুনের নবীন আনন্দে’, ‘ফাগুন হাওয়ায় হাওয়ায়’ দান করবে তার ‘আপনহারা প্রাণ’ তার ‘বাঁধন ছেঁড়া প্রাণ’, তার প্রাণপ্রিয় দর্শকমন্ডলীকে পুনর্জাগরণের, পুনরুজ্জীবনের মহাযাত্রায় সহযাত্রী করে নিয়ে।
প্রধান সম্পাদক : জ্যোতির্ময় নন্দী
প্রধান নির্বাহী : জামাল হোসাইন মনজু
ব্যবস্থাপনা সম্পাদক : অভ্র হোসাইন
প্রকাশক ও চেয়ারম্যান : অর্ক হোসাইন
সম্পাদকীয় ও বাণিজ্যিক কার্যালয় :
এপিক ইত্তেহাদ পয়েন্ট [লেভেল-৪]
৬১৮ নুর আহমদ রোড
চট্টগ্রাম-৪০০০।
Newsroom :
Phone : 01700 776620, 0241 360833
E-mail : faguntelevision@gmail.com