চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার
জেলার উপকূলীয় অঞ্চলের ১২ টি বাহিনীর মোট ৫০ জন জলদস্যু আত্মসমর্পণ করেছে। এদের মধ্যে
তিনজন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তালিকাভুক্ত জলদস্যু। এই ৫০ জন জলদস্যুর মধ্যে ৪৯ জন
পুরুষ এবং ১ জন মহিলা। দেশী-বিদেশী ৯০ টি অস্ত্র ও ২৮৩ রাউন্ড গোলাবারুদসহ শর্তহীনভাবে
আত্মসমর্পণ করে তারা।
আজ ৩০ মে বৃহস্পতিবার
সকালে র্যাব-৭, চট্টগ্রামের তত্ত্বাবধানে পতেঙ্গা এলিট হলে আয়োজিত আত্মসমর্পণ অনুষ্ঠানে
বিপুল সংখ্যক অস্ত্র ও গোলাবারুদসহ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান এমপি’র কাছে আত্মসমর্পণ
করে জলদস্যুদল। স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, রাজনৈতিক ও গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ এবং প্রশাসনের
উর্ধতন কর্মকর্তাবৃন্দ এসময় উপস্থিত ছিলেন।
আত্মসমর্পণকারী
জলদস্যুরা চট্টগ্রাম এবং কক্সবাজার জেলার বাঁশখালী, চকরিয়া, পেকুয়া, মহেশখালী ও কুতুবদিয়া
অঞ্চলের সাম্প্রতিক সময়ের অন্যতম সু-সংগঠিত, ভয়ংকর, দুর্ধর্ষ ও সক্রিয় জলদস্যু বাহিনীর
নেতা ও সদস্য। এসব বাহিনীর সকল অস্ত্র-গোলাবারুদসহ সদলবলে আত্মসমর্পণের ফলে বঙ্গোপসাগরের
তীরবর্তী বাঁশখালী, চকরিয়া, পেকুয়া, মহেশখালী ও কুতুবদিয়া উপকূলীয় অঞ্চলে দস্যুতায়
নিয়োজিত অন্যান্য জলদস্যু ও অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীরাও স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসতে উৎসাহিত
হবে বলে আশা করা যায়।
বাংলাদেশের সীমানার একটি বিশাল অংশ জুড়ে রয়েছে বঙ্গোপসাগর। এই সাগরকে কেন্দ্র করেই আবর্তিত হয় উপকূলীয় অঞ্চলের মানুষের জীবন ও জীবিকা। বিশাল এই উপকূলীয় জনগোষ্ঠীর উপার্জনের অন্যতম আশ্রয়স্থলকে কিছু অস্ত্রধারী বিপথগামী জলদস্যু কণ্টকাকীর্ণ করে রাখে। র্যাবের কঠোর ভূমিকায় ইতিমধ্যে সুন্দরবন অঞ্চলের জলদস্যুরা বিগত সময়ে আত্মসমর্পণ করে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে এসেছে। এরফলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১৮ সালের ১ নভেম্বর অপার ঐশ্বর্যের অপূর্ব লীলাভূমি সুন্দরবনকে দস্যুমুক্ত ঘোষণা করেন। এরই ধারাবাহিকতায় চট্টগ্রাম-কক্সবাজার অঞ্চলে র্যাবের কঠোর পদক্ষেপের ফলে ২০১৮ এবং ২০২০ সালে র্যাব-৭ এর তত্ত্বাবধানে চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারের উপকূলীয় অঞ্চল হতে সর্বমোট ৭৭ জন জলদস্যু আত্মসমর্পণ করে। এরফলে এ অঞ্চলের জলভাগে দস্যুতার ঘটনা অনেক কমে গেছে। আজকের এই আত্মসমর্পণের মধ্য দিয়ে চট্টগ্রাম-কক্সবাজারের উপকূলীয় অঞ্চল জলদস্যুমুক্ত হবার পথে অনেক দূর এগিয়ে যাবে বলে আশা করছেন সচেতন মহল।
- মা.ফা.
মন্তব্য করুন