চট্টগ্রাম সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ৮ পৌষ ১৪৩১
চট্টগ্রাম সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ৮ পৌষ ১৪৩১

উন্নয়ন

জলাবদ্ধতা নিরসন ও বর্ষার পূর্বে নগরীর নালা-খাল পরিষ্কার করার জন্য চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন মেয়র মো. রেজাউল করিম চৌধুরী চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চলমান প্রকল্প থেকে ১০০ কোটি টাকা চেয়েছেন

চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন ও চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ সমন্বয়ে জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্প কাজের অগ্রগতি নিয়ে আয়োজিত আলোচনা সভা

নিউজ ডেস্ক
প্রকাশিত : বৃহস্পতিবার, ২০২২ এপ্রিল ০৭, ০৩:৩০ অপরাহ্ন
চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন মেয়র মো.রেজাউল করিম চৌধুরীর সভাপতিত্বে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান এম. জহিরুল আলম দোভাষ, জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্পের পরিচালক সেনাবাহিনীর ৩৪ ইঞ্জিনিয়ারিং কোরের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা লে. কর্নেল শাহ আলী

জলাবদ্ধতা নিরসন ও বর্ষার পূর্বে নগরীর নালা-খাল পরিষ্কার করার জন্য চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন মেয়র মো. রেজাউল করিম চৌধুরী চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চলমান প্রকল্প থেকে ১০০ কোটি টাকা চেয়েছেন। গত বুধবার (৬ এপ্রিল) নগরীর টাইগারপাসস্থ কনফারেন্স হলে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন ও চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ সমন্বয়ে জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্প কাজের অগ্রগতি নিয়ে আয়োজিত আলোচনা সভায় চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন মেয়র মো.রেজাউল করিম চৌধুরীর সভাপতিত্বে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান এম. জহিরুল আলম দোভাষ, জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্পের পরিচালক সেনাবাহিনীর ৩৪ ইঞ্জিনিয়ারিং কোরের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা লে. কর্নেল শাহ আলী,প্যানেল মেয়র মো. গিয়াস উদ্দিন, ওয়ার্ড কাউন্সিলর ড. নিছার আহমদ মঞ্জু, মো. মোবারক আলী, মো. ইসমাইল, আবদুল মান্নান, সালেহ আহমদ চৌধুরী, জিয়াউল হক সুমন, হাসান মুরাদ বিপ্লব, মো. মোর্শেদ আলম, মো. কাজী নুরুল আমিন, পুলক খাস্তগীর, আবদুস সালাম মাসুম, আবুল হাসনাত বেলাল, এম. আশরাফুল আলম, মো. নুরুল আলম, হাজী নুরুল হক, মো. নুরুল আমিন ও ওয়াসিম উদ্দিনসহ অন্যান্যরা। সভাপতির বক্তব্যে মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, জলাবদ্ধতা নিরসনের মূল কাজের কিছু সিডিএ ও কিছু করেছে সেনাবাহিনীর ইঞ্জিনিয়ারিং কোরের ৩৪ বিগ্রেড। এই প্রকল্পের অধীনে নগরীর ওয়ার্ডগুলোতে বেশ কিছু ড্রেন নির্মাণ করা হয়েছে। এসব ড্রেনের পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা ও রক্ষনাবেক্ষণে চট্টগ্রাম সেটি কর্পোরেশনের কোন বরাদ্দ নেই। বর্তমানে কর্পোরেশনের ফান্ডের অবস্থাও ততো ভালো না। এই পরিস্থিতিতে নালা-খাল মেইনেটিন্যান্সের দায়িত্ব কর্পোরেশনের পক্ষে নেয়া সম্ভব নয়। কারণ কর্পোরেশনে ফান্ড ও প্রয়োজনীয় জনবলের অভাব রয়েছে। তিনি বলেন, যদি সিডিএ নালা-খাল পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা কাজে কোন বরাদ্দ দিতে না পারলে সে ক্ষেত্রে আমাদের বরাদ্দের জন্য মন্ত্রণালয়ের দারস্থ হওয়া ছাড়া উপায় থাকবে না। এসময় চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়াম্যান জহিরুল আলম দোভাষ এবারের জলাবদ্ধতা অন্যান্যবারের মতো হবে না বলে আশা প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, জলাবদ্ধতা প্রকল্পের চলমান চার বছরের কাজের মধ্যে এখনো দুই বছরের কাজ বাকি। এখনই শতভাগ ফলাফল পাবো এটা মনে হয় না। তিনি নগরীর জলাবদ্ধতা নিরসনে কর্ণফুলী নদীর ড্রেজিংও প্রয়োজন বলে মন্তব্য করেন। প্রয়োজনে এ বিষয়ে পানি বিশেষজ্ঞদের মতামত নেয়া যায় বলে উল্লেখ করেন।সভায় জলাবদ্ধতা নিরসনে চলমান মেগা প্রকল্পের আওতাভূক্ত ৮ দশমিক ৭২ কিলোমিটার দীর্ঘ পৃথক সাতটি খালের উন্নয়ন কাজ শেষ হওয়া এলাকার কাউন্সিলরগণও উপস্থিত ছিলেন। তাঁরা তাদের এলাকার বিভিন্ন সমস্যার কথা প্রকল্প পরিচালকের নিকট তুলে ধরেন। তাদের বেশির ভাগের বক্তব্য ছিলো বর্ষার পূর্বে খালের মাটি ও বাঁধ অপসারণ, নালার স্লোভ ঠিক করা ও প্রকল্পের কাজের সাথে কাউন্সিলরদের সমন্বয় করা ইত্যাদি। এতে জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক লে. কর্নেল শাহ আলী বলেন, আসন্ন বর্ষার পূর্বে অর্থ্যাৎ চলতি এপ্রিল মাস পর্যন্ত আমরা কাজ করতে পারবো। আমরা নগরীর বিভিন্ন এলাকায় খালগুলোতে ১৭৬ কি.মিটারের মতো রিটেইনিং ওয়াল নির্মাণ কাজ সম্পন্ন করেছি। জলাবদ্ধতা নিরসন কাজে এটা বড় অগ্রগতি বলা যায়। একই সাথে অনেক এলাকায় অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযানও চালাতে হচ্ছে। পুরো প্রকল্পের কাজ সমানতালে করা সময় সাপেক্ষ। কারণ এখানে বহু প্রতিবন্ধকতা আছে। তবে এবছর নগরীর প্রবর্তক মোড়ে প্রতিবারের মতো জলাবদ্ধতা হবে না বলে আশা করা যায়। কারণ প্রিমিয়ার বিশবিদ্যালয় ক্যাম্পাস অপসারণসহ এর পিছনের খালের অবৈধ স্থাপনা সরানো হচ্ছে। শাহ আলী নগরীর পাঁচলাইশ, কাপাসগোলা, কাতালগঞ্জ এলকায় খালের সম্প্রসারণ করা যায়নি বলে এখনো ওই এলাকা জলমগ্ন হচ্ছে বলে উল্লেখ করেন। এছাড়াও বিভিন্ন এলাকায় ব্রিজের নীচ দিয়ে ওয়াসা ও কর্ণফুলী গ্যাসসহ বিভিন্ন সেবা সংস্থার সংযোগ লাইনের কারণে জলাবদ্ধতা হচ্ছে বলে জানান। তিনি বলেন, সংযোগ লাইনের সাথে বিভিন্ন ময়লা আবর্জনা আটকে গিয়ে পানি চলাচলে প্রতিবন্ধকতা হয়। উদহারন স্বরূপ তিনি কাপাসগোলা ব্রিজের কথা উল্লেখ করেন। তিনি আরো বলেন, শহরের পানি খালে নিতে হলে ড্রেন নির্মান করা লাগবে। যে কাজ আমরা ইতিমধ্যে শেষ করেছি। এসব ড্রেনের স্লোভ ঢালু করে তৈরি করা হয়েছে। যাতে পনি সহজে খালে পৌঁছাতে পারে। আমরা মোট ৫০ কি.মি. ড্রেন নির্মাণ করেছি। রিটাইনিং খালের নির্মণ কাজও এখন দৃশ্যমান হচ্ছে। যে ৭টি খালের উন্নয়ন কাজ শেষ হয়েছে তা বুঝে নিতে ইতিমধ্যে সিডিএকে পত্রদিয়ে অবহিত করেছি। প্রকল্পে আমাদের কাজ হলো অবকাঠামোগত কাজ শেষে বুঝিয়ে দেয়া। রক্ষনারবক্ষণ সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলো করবে। প্রকল্প পরিচালক জুনের মধ্যে ১৮টি খালের রিটেইনিং ওয়ালের কাজ শেষ হবে বলে আশা প্রকাশ করেন। এই কাজে কর্পোরেশনের কাছ থেকে তার চলমান কাজের সহায়তার হুইল হল এস্টেভেটর দেয়ার অনুরোধ জানান এবং তিনি জলাবদ্ধতা নিরসনে প্রতিবন্ধকতা হিসেবে ২৩ খালের সুইচ গেইট নির্মাণ ও ১২টি খালের রেগুলেটর নির্মাণ ও রক্ষনা বেক্ষনের কাজ সম্পন্ন না হওয়াকে উল্লেখ করেন। তিনি বলেন এই সব কাজে পানি উন্নয়ন বোর্ডসহ সংশ্লিষ্ট সহযোগিতা লাগবে। তবে মে মাসের মধ্যে পাম্প বসানের কাজ সম্পন্ন হবে। এজন্য প্রশিক্ষিত লোকবল নিয়োগ করা গেলে জলাবদ্ধতা নিরসনের সুফল কিছুটা দৃশ্যমান হবে। তবে পুরোপুরি সুফল পেতে আগামী বছর পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে।মেয়র এ ব্যাপারে কর্পোরেশনের প্রধান প্রকৌশলীকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে নির্দেশনা দেন।

- তথ্য ও ছবি চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন

- মা.ফা/জা.হো.ম 

আমাদের ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Video