প্রভাবশালী মার্কিন সাময়িকী নিউজউইক-এর সর্বশেষ সংস্করণে বাংলাদেশের অভাবনীয় অর্থনৈতিক ও দারিদ্র্য দূরীকরণের সাফল্য নিয়ে একটি বিশেষ প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে।
এতে বলা হয়েছে: বৈরী অবস্থা কাটিয়ে বিশ্বের যেসব দেশের অর্থনীতি সবচেয়ে
শক্তিশালী ও টেকসই চেহারা পাবে, তার একটি বাংলাদেশ। এই অর্থনৈতিক সফলতার পেছনে জনসংখ্যাগত
সুবিধার পাশাপাশি শক্তিশালী শিল্প খাতের বড় ভূমিকা রয়েছে।
‘বাংলাদেশ:
একটি নবীন রাষ্ট্রের সমৃদ্ধ ভবিষ্যতের দিকে দ্রুত যাত্রা’
শীর্ষক শিরোনামের নিউজউইকের আন্তর্জাতিক বিনিয়োগ অংশে এই প্রতিবেদনটি ছাপা হয়। এতে
বলা হয়েছে, ২০২১-এ স্বাধীনতার ৫০তম বার্ষিকী উদযাপন করেছে বাংলাদেশ। দেশটি তার দ্বিতীয়
অর্ধশতকে প্রবেশ করছে শক্ত অবস্থান নিয়ে। বাংলাদেশ বর্তমানে এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয়
অঞ্চলের সবচেয়ে দ্রুত বর্ধনশীল অর্থনীতির দেশগুলোর একটি।
গত এক দশকে বাংলাদেশের অর্থনীতির সাফল্যের চিত্র তুলে ধরে প্রতিবেদনে
বলা হয়েছে, ২০১০ থেকে ২০১৯-এ বাংলাদেশের প্রকৃত জিডিপি প্রবৃদ্ধি ছিল গড়ে ৬.৮ শতাংশ।
চলতি বছর ৬.৬ শতাংশ প্রবৃদ্ধির আভাস দিয়েছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ)। সংস্থাটির
মতে, ২০২৩ নাগাদ এদেশের প্রবৃদ্ধি করোনা মহামারির আগের অবস্থা ছাড়িয়ে ৭.১ শতাংশে পৌঁছাবে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের অর্থনীতির প্রধান খাতগুলোতে ধারাবাহিক
উন্নয়নের পাশাপাশি দারিদ্র্য বিমোচনে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি রয়েছে। ২০০৯ থেকে জাতির পিতা
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কন্যা শেখ হাসিনা বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী পদে আছেন।
এ সময়ে দেশের অভ্যন্তরীণ অর্থনীতির দ্রুত রূপান্তর ঘটেছে। আজকের বাংলাদেশ এমন একটি
দেশ, যেটা সত্যিকার অর্থে সমৃদ্ধ ভবিষ্যতের দিকে এগোচ্ছে।
নিউজউইক বলছে, বাংলাদেশের অর্থনীতিতে শিল্প খাতের অবদান ২০১০-এ ২০ শতাংশেরও
কম ছিল, যা ২০১৮-তে বেড়ে ৩৩ দশমিক ৫ শতাংশ হয়েছে। বাংলাদেশের মোট দেশজ উৎপাদনে (জিডিপি)
উৎপাদন খাতের অবদান ১৯৮০’র পর থেকে দ্বিগুণেরও বেশি হয়েছে। ’৯০-এর দশকের তুলনায় রপ্তানির
পরিমাণ বেড়েছে ২০ গুণ।
প্রতিবেদন অনুসারে, দেশি উদ্যোক্তাদের হাত ধরে শিল্প খাতের উন্নয়ন বাংলাদেশের
অর্থনীতিকে কৃষির ওপর নির্ভরতা কমিয়ে একটি শিল্পপ্রধান রাষ্ট্রে পরিণত হওয়ার পথে নিয়ে
গেছে। এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশের বেশ কয়েকটি ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের নাম উল্লেখ করা হয়,
যারা দেশের উন্নয়নে উল্লেখযোগ্য অবদান রেখেছে।
প্রতিবেদনে নির্মাণ ও আবাসন প্রতিষ্ঠান কনকর্ড গ্রুপ, দেশের অন্যতম
শীর্ষ তৈরি পোশাক রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান এনভয় গ্রুপ এবং জ্বালানি, আবাসন ও স্বাস্থ্যসেবা
খাতের প্রতিষ্ঠান ইউনাইটেড গ্রুপের কথাও উল্লেখ করে।
এছাড়াও প্রতিবেদনটিতে সিমেন্ট, কনক্রিট রেডিমিক্স, জ্বালানি ও টেলিযোগাযোগ
খাতের প্রতিষ্ঠান কনফিডেন্স গ্রুপ, অবকাঠামো-জ্বালানি ও বিমা খাতের প্রতিষ্ঠান শিকদার
গ্রুপ, এলইডি বাতি ও বৈদ্যুতিক মিটার নির্মাতা হোসাফ গ্রুপ, স্বাস্থ্যসেবা, খাদ্যপণ্য
ও পানীয়, গণমাধ্যম, ইলেকট্রনিক্স, লজিসটিকস ও ডিস্ট্রিবিউশন খাতে ট্রান্সকম গ্রুপ এবং
বীজ, গবাদিপশু, রেশম ও পোশাক খাতের প্রতিষ্ঠান মাল্টিমোড গ্রুপের কথাও উল্লেখ করা হয়।
মন্তব্য করুন