কৃষি বিপ্লব ঘটানোর
জন্য অবকাঠামোগত উন্নয়নের ধারায় সড়ক, কালভার্টসহ নানামুখি উন্নয়ন কার্যক্রম চলছে চট্টগ্রামের
মিরসরাই উপজেলার হিঙ্গুলী ইউনিয়নের বিস্তৃত প্রান্তরে। যেখানে বিগত ২০১৬ সালে স্থানীয়
সরকার মন্ত্রণালয়ের অধীনে একটি ব্রীজ নির্মিত হয়েছিল। কিন্তু তার সংযোগ সড়ক নির্মাণ
করার কথা থাকলেও শুধু ব্রীজ নির্মাণের মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল ওই কৃষিজনপদ। ব্রীজ আছে
নেই সংযোগ সড়ক এমন শিরোনামও হয়েছিল গণমাধ্যমের।
সরেজমিনে গিয়ে
স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা যায়, উপজেলার ২নং হিঙ্গুলী ইউনিয়নের মেহেদী নগরের পূর্ব
পাশে টিলা সংলগ্ন এলাকায় নেই কোন মানুষের বসতি। আছে শুধু কৃষি জমি আর পাহাড় বেষ্টিত
জনপদ। এসব কৃষি জমিতে পানি জমাট বাঁধা থেকে রক্ষা করতে এবং কৃষকের যাতায়াতের সুবিধার্থে
শিমুলতলি, বড়ঘোণা, ফরেস্ট অফিস সংলগ্ন মাহাদুর ছড়া ও বেছাখামা এলাকায় নির্মিত হচ্ছে
৮শ ৩০ মিটার কাঁচা রাস্তা। খাল সংলগ্ন ফরেস্ট অফিস এলাকার সড়কের প্লাসেডিং ২শত ৪৫ মিটার,
ছরা খনন ৮শ ৫০ মিটার এবং কৃষি জমির পানি নিষ্কাশনের জন্য একটি কালভার্ট নির্মাণ কাজ।
স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের অধীনে বিভিন্ন প্রকার প্রকল্পের মাধ্যমে সর্বমোট ১৭ লক্ষ
টাকা ব্যায়ে উক্ত কর্মযজ্ঞ চলছে বলে জানা যায়।
সরেজমিনে দেখা
যায়, স্থানীয় কৃষকরা পাহাড় থেকে বিভিন্ন প্রকার কাঠের লাকড়ি, বাঁশের কঞ্চি এবং ঝাড়–ফুল নিয়ে গাড়ী
যাতায়াতের ব্যবস্থা না থাকায় পায়ে হেঁটে বারইয়ারহাট বাজারে বিক্রির জন্য নিয়ে আসছে।
এছাড়া পাহাড় সংলগ্ন এলাকায় শত শত একর জমিতে হচ্ছে বিভিন্ন প্রকার চাষাবাদ। এই চাষাবাদ
হয় এক ধাপে। কারণ হিসেবে জানা যায়, সেখানে ছরা খনন করা না থাকায় এবং পাহাড় ধসে ছরা
ভরাট হয়ে যাওয়ায় বর্ষাকালে বৃষ্টির পানি আর পাহাড়ী ঢলে কৃষি জমিতে পানি জমে থাকে। ফলে
সেখানে কোন প্রকার চাষাবাদ করা সম্ভব হয় না। আশা করা হচ্ছে, বর্তমানে ছরা খনন এবং কালভার্ট
নির্মাণের ফলে সেখানে আর পানি জমে থাকবে না। কৃষকরাও নিয়মিত চাষাবাদ করতে পারবে। এছাড়া
সড়ক না থাকায় কৃষিপণ্য পরিবহনের অসুবিধার কারণে অনেক জমি অনাবাদি পড়ে থাকতো, বর্তমানে
সড়ক নির্মাণ করায় কৃষিপণ্য পরিবহনের জন্য যানবাহনও চলাচল করেত পারবে।
স্থানীয় কৃষক
আমিন মিয়া বলেন, মুল সড়ক থেকে এখানে পায়ে হেঁটে আসতে প্রায় ১ ঘন্টারও বেশি সময় লাগে।
সড়ক না থাকায় বর্ষাকালে প্রচুর কষ্ট হয় কৃষকের। ব্রীজ হয়েছে এখন রাস্তা ও ছরা খনন করা
হচ্ছে এখন আর কষ্ট থাকবে না।
এবিষয়ে হিঙ্গুলী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এবং ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি মো. সোনা মিয়া বলেন, আমি চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ার পর মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উন্নয়ন কার্যক্রম জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেয়ার লক্ষ্যে স্থানীয় কৃষকদের অসুবিধার কথা শুনে নিজে সরেজমিন পরিদর্শন করি। বিষয়টি স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সাথে আলাপ করলে তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন এবং একটি বাজেট নির্ধারণ করেন। পরে মিরসরাইয়ের সাংসদ মাননীয় ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেনের নির্দেশনায় উন্নয়ন বরাদ্দ নিয়ে এই কার্যক্রমগুলো করছি।
- নাছির উদ্দিন/মিরসরাই
মন্তব্য করুন