চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের
(চবি) ইতিহাস বিভাগের শিক্ষক রন্টু দাশ শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে পদত্যাগপত্রে
স্বাক্ষর করেছেন। পদত্যাগের বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলে জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়
কর্তৃপক্ষ ।
আজ ইতিহাস বিভাগের
শিক্ষার্থীরা ফ্যাসিবাদের দোসর ও খুনি দাবি করে সেই বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ও চবি ছাত্রলীগের
সাবেক সহ-সভাপতি রন্টু দাশের পদত্যাগ দাবি করে। পরে তোপের মুখে পদত্যাগপত্রে স্বাক্ষর
করেন ওই শিক্ষক।
এ ব্যাপারে ইতিহাস
বিভাগের চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. শামীমা হায়দার বলেন, ডিপার্টমেন্টে হট্টগোল চলাকালীন
আমি ডিন অফিসে ছিলাম। আনুমানিক ১২ টার দিকে আমাকে জানানো হয় ডিপার্টমেন্টে গন্ডগোল
হচ্ছে। আমি এসে রন্টু দাস, মো. নুরুল হামিদ কানন (সহকারী প্রক্টর) এবং শিক্ষার্থীদের
আমার অফিসে দেখি। শিক্ষার্থীদের কাছে দাবী জানতে চাইলে তারা আমাকে জানায়, আজকে তারা
রন্টু দাসের পদত্যাগপত্র নিয়েই যাবে।
পরবর্তী পদক্ষেপের
ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, যেহেতু রন্টু দাস পদত্যাগপত্র লিখেছেন, এখন বিশ্ববিদ্যালয়
নিয়মানুযায়ী যা হবার হবে। আমি মনে করি পদত্যাগপত্র দিয়েই তো শুধু পদত্যাগ হয়না। সব
কিছুর একটা নিয়ম রয়েছে। যদি প্রয়োজন হয়, তারা মামলা করুক।
চবির প্রক্টর
অধ্যাপক ড. তানভীর মোহাম্মদ হায়দার আরিফ বলেন বিষয়টি হচ্ছে একজন শিক্ষক শিক্ষার্থীদের
দ্বারা ছাত্রহত্যার অভিযোগে অভিযুক্ত। শিক্ষার্থীরা কয়েকটি পত্রিকার নিউজ দেখিয়েছে
যেখানে রন্টু দাস একটি মামলার প্রধান আসামি এবং তাকে পুলিশ গ্রেফতারও করেছে। ফলে বৈষম্য
আন্দোলনের সাথে সম্পৃক্ত শিক্ষার্থীরা তার পদত্যাগের দাবী জানিয়েছে। আমি আসার পূর্বে
তিনি একটি পদত্যাগপত্র তৈরী করেছেন এবং তাতে স্বাক্ষরও করেছেন। তিনি আরো বলেন, পদত্যাগ
জোরপূর্বক বা কেউ চাইলে মাত্রই হয় না। এটা বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ম ও প্রক্রিয়ার মাধ্যমে
হবে। আমরা বিষয়টি দেখছি এবং আমি শিক্ষকদের সাথে কথা বলব এবং আলোচনা করব বলে শিক্ষার্থীদের
আশ্বাস দিলে তারা ইতিহাস বিভাগ ত্যাগ করে।
রন্টু দাস এর
কাছে পদত্যাগের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি কোন মন্তব্য করেননি।
বিভিন্ন সূত্র
হতে জানা যায়, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগে শিক্ষক নিয়োগের একটি বিজ্ঞপ্তি
প্রকাশিত হয় ২০১২ সালের ২ ফেব্রুয়ারি। বিজ্ঞপ্তি অনুসারে গ্রেডিং পদ্ধতিতে উত্তীর্ণ
প্রার্থীদের এসএসসি বা সমমান ও এইচএসসি বা সমমান পরীক্ষার উভয়টিতে ন্যূনতম জিপিএ-৩.০
পয়েন্ট এবং সংশ্লিষ্ট বিষয়ে স্নাতক ও স্নাতকোত্তরে পৃথকভাবে ৩.৫ থাকতে হবে। রন্টু দাস
উক্ত শিক্ষক পদে আবেদন করেন যার এইচএসসিতে রেজাল্ট ২.৯। বিভাগের প্ল্যানিং কমিটি এর প্রতিবাদ করলেও
বিভাগের প্রভাবশালী এক শিক্ষকের চাপে আবেদনপত্রটি গৃহীত হয়। এরই মধ্যে তাকে নিয়োগের
জন্য শিথিল করা হয় শিক্ষক নিয়োগের যোগ্যতা। পরবর্তীতে তিনি ইতিহাস বিভাগের শিক্ষক হিসেবে
যোগদান করেন।
তার শিক্ষক হওয়ার যোগ্যতা নেই বলেও শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেছে । বিভিন্ন সূত্র হতে জানা যায় ২০১২ সালে শিক্ষক নিয়োগ পরিক্ষায় তাকে নিয়োগের জন্য শিক্ষক নিয়োগের যোগ্যতা শীথিল করা হয়েছে। তার এইচএসসি তে রেজাল্ট ছিল ২.৯ এবং অনার্সে সিজিপিএ ২.৯২।
- চ.বি প্রতিনিধি
মন্তব্য করুন