চট্টগ্রাম বুধবার, ০৯ এপ্রিল ২০২৫, ২৬ চৈত্র ১৪৩১
চট্টগ্রাম বুধবার, ০৯ এপ্রিল ২০২৫, ২৬ চৈত্র ১৪৩১

আন্তর্জাতিক

গাজায় ইসরায়েলি বিমান হামলা

ফিলিস্তিনি জিহাদ নেতা জাবারি ও শিশুসহ নিহত ১১


প্রকাশিত : রবিবার, ২০২২ আগস্ট ০৭, ১১:২৮ পূর্বাহ্ন
ইসরায়েলি বিমান হামলায় নিহত পাঁচ বছরের শিশুকে ঘিরে স্বজনদের আহাজারি।

ফিলিস্তিনের গাজা ভূখণ্ড থেকে শুক্রবার রাতভর শয়ে শয়ে রকেট ছোঁড়ার জবাবে ইসরায়েলি বিমানবাহিনী গতকাল শনিবার ঐ উপত্যকার বিভিন্ন লক্ষ্যবস্তুর ওপর গোলাবর্ষণ করে। 


এ হামলায় একটি ফিলিস্তিনি শিশুসহ ১১ জন নিহত হয়েছে, যাদের মধ্যে ফিলিস্তিনী ইসলামিক জিহাদ (পিআইজি)-এর নেতা তাইসির জাবারিও রয়েছেন।

 

বিবিসি সংবাদদাতারা জানাচ্ছেন, ইসরায়েল অধিকৃত পশ্চিম তীর থেকে অভিযান চালিয়ে পিআইজির ১৯ জন সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

 

সর্বশেষ এসব ঘটনা গত এক বছরের মধ্যে ইসরায়েল এবং গাজার মধ্যে সবচেয়ে গুরুতর সহিংসতা।

 

গত বছরের মে মাসে ১১-দিনের লড়াইয়ে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার আগে সহিংসতায় ২০০ জনেরও বেশি ফিলিস্তিনি এবং এক ডজন ইসরায়েলি নিহত হয়।

 

সর্বশেষ সংঘাতে গতকাল শনিবার ইসরায়েলের শহরগুলিতে রকেট হামলার সতর্কতার সাইরেন বাজতে থাকে।

 

ইসরায়েলি সেনাবাহিনী জানাচ্ছে, গাজা থেকে ইসরায়েলকে লক্ষ্য করে রাতভর প্রায় ২০০টি রকেট ছোঁড়া হয়েছে।

 

তবে সেগুলোর বেশিরভাগই ইসরায়েলের আয়রন ডোম ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা দিয়ে ধ্বংস করা হয়।

 

এসব হামলায় কোন ইসরায়েলি হতাহতের ঘটনা ঘটেনি বলে জানা যাচ্ছে।

 

এর জবাবে পিআইজি-কে লক্ষ্য করে ইসরায়েল বিমান হামলা চালায়।

 

ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা নিশ্চিত করেছেন যে গাজা ভূখণ্ডের দক্ষিণে খান ইউনিসের কাছে একজন নিহত হয়েছেন।

 

ইসরায়েলি প্রতিরক্ষাবাহিনী আইডিএফ জানাচ্ছে, ইসলামিক জিহাদের প্রায় ৩০টি লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত করা হয়েছে।

 

এর মধ্যে রয়েছে দুটি অস্ত্র গুদাম এবং ছয়টি রকেট তৈরির কারখানা। হামলায় অন্তত ৭৮ জন আহত হয়েছে।

 

আইডিএফ বলছে, নিহত তাইসির জাবারি পিআইজের একজন সিনিয়র কমান্ডার ছিলেন এবং ইসরায়েলি বেসামরিক নাগরিকদের বিরুদ্ধে একাধিক সন্ত্রাসী হামলা চালানোর জন্য তাঁকে অভিযুক্ত করা হয়েছে।

 

তবে ইসরায়েলি হামলায় নিহতদের মধ্যে আলা কাদ্দুম নামে পাঁচ বছর বয়সী একটি শিশুও রয়েছে বলে স্থানীয় কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।

 

বিমান হামলার লক্ষ্য হামাস নয়

 

কিন্তু ঐ অঞ্চলের সবচেয়ে বড় জঙ্গি গোষ্ঠী হামাস-- ইসলামিক জিহাদের মতবাদের সাথে যার মিল রয়েছে এবং যারা প্রায়শই তার কর্মকাণ্ড পিআইজির সাথে সমন্বয় করে-- তারা তাদের রকেট অস্ত্রাগার থেকে গোলা ছুঁড়েছে বলে দৃশ্যত মনে হচ্ছে না।

 

ফলে, হামাসকে লক্ষ্য করে কোনো ইসরায়েলি বিমান হামলা হয়েছে কিনা তা জানা যাচ্ছে না।

 

শুক্রবার রাতে হামাস এক জোরালো বিবৃতি জারি করে বলেছে, প্রতিরোধী গোষ্ঠীগুলো ঐক্যবদ্ধ হয়েছে।

 

কিন্তু গোষ্ঠীটি এখন গাজার প্রশাসন পরিচালনা করে, তাই বাস্তব বিবেচনা-বোধ থেকে এসব হামলায় এটি নিজেকে জড়িয়ে ফেলতে চায় না।

 

ইসলামিক জিহাদ পশ্চিম তীরে তাদের একজন নেতাকে গ্রেপ্তারের প্রতিশোধ নিতে পারে এই আশঙ্কার মধ্যে ইসরায়েল গত সপ্তাহে গাজার সাথে তার সব সীমান্ত ক্রসিং বন্ধ করে দেয়।

 

তারপর থেকে ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে জনজীবন আরও বেশি কঠিন হয়ে পড়েছে।

 

তবে গাজায় বেসামরিক মৃত্যুর সংখ্যা যদি দ্রুত বেড়ে যায়, তাহলে এই লড়াইয়ে যোগদানের প্রশ্নে হামাসের হিসেব বদলে যেতে পারে।

 

আর হামাস যদি এই যুদ্ধে যোগদান করার সিদ্ধান্ত নেয়, তাহলে মধ্যপ্রাচ্যের চলমান সংঘাত আরও দ্রুত তীব্র হয়ে উঠবে বলে সংবাদদাতারা মনে করছেন।

আমাদের ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Video