পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের পর ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের শাসক দল তৃণমূলের আরো এক হেভিওয়েট নেতা কেন্দ্রীয় তদন্ত ব্যুরো সিবিআই-এর জালে ধরা পড়েছেন। গরুপাচার মামলায় তৎপর সিবিআই আজ বৃহস্পতিবার গ্রেফতার করেছে রাজ্যের বীরভূম জেলার তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলকে।
গতকাল বুধবার হাজিরা এড়ানোর
পর আজ সকালে আদালতের নির্দেশনামা ও মেডিক্যাল রিপোর্ট নিয়ে আজ বোলপুরের নীচুপট্টিতে
অনুব্রতর বাড়িতে পৌঁছে যায় সিবিআই-এর ১০-১২টি গাড়ির বহর। বাড়ির চারপাশ ঘিরে ফেলে
কেন্দ্রীয় বাহিনী। বাড়িতে ঢুকে দরজা বন্ধ করে দেন সিবিআই কর্মকর্তারা। বাড়ির সকলের
মোবাইল ফোন নিয়ে নেওয়া হয়। একটি দল বাড়ির দোতলায় অনুব্রতকে জিজ্ঞাসাবাদ করে। আরেকটি
দল অনুব্রতর বাড়ির একতলায় অফিসে নথিপত্র পরীক্ষার কাজ চালায়।
গরুপাচার মামলায় অনুব্রত
মণ্ডলের বাড়িতে সিবিআই হানার খবর পেয়ে বীরভূমের তৃণমূল জেলা সভাপতির বোলপুরের বাড়ির
সামনে ভিড় জমায় এলাকাবাসীরা। এরপরই সময় যত গড়ায়, জল্পনা বাড়তে থাকে, তবে কি আজই
গ্রেফতার হতে চলেছেন রাজ্যশাসক দলের দোর্দণ্ডপ্রতাপ নেতা?
সিবিআই সূত্রের খবর, এর
আগে গতকাল বোলপুর মহকুমা হাসপাতালের চিকিৎসক চন্দ্রনাথ অধিকারীর সঙ্গে কথা বলেন তদন্তকারীরা।
আজ ওই চিকিৎসকের বয়ান রেকর্ড করা হতে পারে।
সিবিআই সূত্রের আরো খবর,
অনুব্রত প্রভাব খাটিয়ে চিকিৎসককে দিয়ে প্রেসক্রিপশন লেখানোর চেষ্টা করেছিলেন কিনা,
তা জানতে চাওয়া হয়। কার নির্দেশে ওই সরকারি চিকিৎসক বীরভূমের তৃণমূল জেলা সভাপতির বাড়িতে
গিয়েছিলেন, তাও জানতে চায় সিবিআই।
উল্লেখ্য, ইতোমধ্যেই অনুব্রতকে
গাড়িতে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এরপর মেডিক্যাল টেস্ট করা হবে বলে সূত্রের খবর। আর
এরপর তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে বলে জানা যাচ্ছে।
জেলা সভাপতি থেকে জাতীয়
কর্মসমিতির সদস্য পর্যন্ত তৃণমূলের একাধিক গুরুত্বপূর্ণ পদে ছিলেন অনুব্রত মণ্ডল।
তাই এ ঘটনায় স্বাভাবিকভাবেই অস্বস্তিতে তৃণমূল। এবার কী করবে দল? অনুব্রতের পাশে থাকবে,
নাকি দূরত্ব তৈরি করবে? এ গ্রেফতারকে কেন্দ্র করে স্বভাবতই উত্তেজনা ছড়িয়েছে।
অন্যদিকে গরুপাচার মামলায় এপর্যন্ত ১০ বার অনুব্রতকে তলব করে সিবিআই। ৯ বার হাজিরা এড়ায় তৃণমূল জেলা সভাপতি। মাত্র একবার হাজিরা দেন তৃণমূল জেলা সভাপতি। অসুস্থতার কথা বলে গতকালও হাজিরা এড়ান অনুব্রত। গরুপাচার মামলায় ইতিমধ্যেই গ্রেফতার হয়েছেন অনুব্রতর দেহরক্ষী সায়গল হোসেন।
মন্তব্য করুন