চট্টগ্রাম বৃহস্পতিবার, ১৭ এপ্রিল ২০২৫, ৪ বৈশাখ ১৪৩২
চট্টগ্রাম বৃহস্পতিবার, ১৭ এপ্রিল ২০২৫, ৪ বৈশাখ ১৪৩২

আন্তর্জাতিক

সন্ত্রাসবাদ বিরোধী আইন ভঙ্গের অভিযোগ

ইমরান খানের বিরুদ্ধে পুলিশি তদন্ত শুরু

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত : সোমবার, ২০২২ আগস্ট ২২, ১০:২০ পূর্বাহ্ন
পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের বিরুদ্ধে একজন নারী বিচারক ও রাওয়ালপিণ্ডির পুলিশ প্রধানকে হুমকি দেয়ার অভিযোগ এনেছে পুলিশ।

সন্ত্রাসবাদ বিরোধী আইন ভঙ্গ করার অভিযোগে পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করেছে সেদেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।

 

শনিবার একটি রাজনৈতিক সমাবেশে ইমরান খান পুলিশ ও বিচার বিভাগের বিরুদ্ধে হুমকি দিয়ে এ আইনের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন করেছেন বলে পুলিশ অভিযোগ করেছে।

 

এ নিয়ে দেশটিতে উত্তেজনা তৈরি হয়েছে। সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীর বাড়ির বাইরে হাজার হাজার সমর্থক অবস্থান নিয়েছে। ইমরান খানকে গ্রেপ্তার করা হলে তারা সব কিছুর নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেবে বলে ঘোষণা দিয়েছে।

 

গত এপ্রিল মাসে ক্ষমতা হারানোর পর থেকে পাকিস্তান সরকার ও সেনাবাহিনীর কড়া সমালোচকে পরিণত হয়েছে ইমরান খান।

 

ক্রিকেটার থেকে রাজনীতিতে আসা ইমরান খান গত শনিবার অভিযোগ করেছিলেন, তাঁর একজন ঘনিষ্ঠ সহযোগীকে নির্যাতন করা হয়েছে। এরপরেই তাঁর বিরুদ্ধে তদন্ত শুরুর করার কথা জানিয়েছে পুলিশ।

 

উস্কানি দেয়ার অভিযোগে ওই সহযোগীকে আটক করার কারণে শনিবার একটি জনসভায় ইসলামাবাদের পুলিশ প্রধান এবং একজন নারী বিচারকের নিন্দা করেন ইমরান খান।

 

সমাবেশে দেয়া বক্তৃতায় তিনি তাঁর দলের সহকর্মীদের উপর অন্যায় আচরণ করা হচ্ছে বলে অভিযোগ তুলে ওই দুজনের উদ্দেশ্যে বলেন, তোমরাও প্রস্তুত থেকো, আমরাও তোমাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবো।

 

পুলিশের তদন্তকারীরা বলছেন, রাষ্ট্রের কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে হুমকি দিয়ে ইমরান খান সন্ত্রাসবাদ বিরোধী আইন ভঙ্গ করেছেন।

 

ইমরান খানের বিরুদ্ধে পুলিশের তদন্ত শুরুর খবর জানার পর হাজার হাজার সমর্থক তার ইসলামাবাদের বাড়ির সামনে জড়ো হন। তারা ঘোষণা দেন, ইমরান খানকে গ্রেপ্তার করা হলে তারা পুরো রাজধানীর নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেবে।

 

তবে সেখানে উপস্থিত পুলিশ সদস্যরা বলেছেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে গ্রেপ্তার করতে নয়, তারা আইনশৃঙ্খলা রক্ষা করার জন্য সেখানে রয়েছেন।

 

পুলিশের তদন্ত করার ঘোষণা এমন সময়ে এলো, যখন পাকিস্তানের সরকার ও ইমরান খানের মধ্যে চরম উত্তেজনা চলছে।

 

গত এপ্রিল মাসে একটি অনাস্থা ভোটে হেরে প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর থেকে বিদায় নিতে হয় ইমরান খানকে। এর পর থেকেই তিনি নতুন নির্বাচনের দাবি আসছেন।

 

বিভিন্ন বক্তব্যে পাকিস্তানের সরকার ও সেনাবাহিনীর কড়া সমালোচনাও করেছেন।

 

শনিবার পাকিস্তানের গণমাধ্যমের নিয়ন্ত্রক সংস্থা ঘোষণা দিয়েছে, ইমরান খানের বক্তব্য সরাসরি প্রচার করতে পারবে না দেশের টেলিভিশন চ্যানেলগুলো, কারণ সেখানে রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠানগুলোর বিরুদ্ধে বিদ্বেষমূলক বক্তব্য থাকে।

 

তবে ইমরান দাবি করেছেন, সরকার তার ওপর সেন্সরশিপ আরোপ করতে চাইছে। রোববার রাওয়ালপিণ্ডিতে আরেকটি সমাবেশে ইমরান খান ওই ঘোষণার নিন্দা করেছেন।

 

তিনি আরো দাবি করেছেন, সরকার ইউটিউব দেখায় বাধা তৈরি করছে, যাতে জনগণ তাঁর বক্তব্য শুনতে না পারে।

 

ক্ষমতা থেকে সরে যেতে বাধ্য হলেও পাকিস্তানে ইমরান খানের পেছনে অনেক ভোটারের সমর্থন রয়েছে।

 

গত মাসেই পাকিস্তানের গুরুত্বপূর্ণ পাঞ্জাবের প্রাদেশিক পরিষদের উপ-নির্বাচনে পিএমএল-এনকে হারিয়ে বড় বিজয় পেয়েছে ইমরান খানের দল পিটিআই।

 

অনেকে মনে করেন, ওই নির্বাচনের ফলাফল ইঙ্গিত দিচ্ছে যে, ভোটারদের মধ্যে ইমরান খানের জনপ্রিয়তা অব্যাহত রয়েছে।

 

ইমরানের দাবি অনুযায়ী আগাম নির্বাচন দেয়া হলে সেখানে ফলাফল কি হতে পারে, সে বিষয়েও একটি ইঙ্গিত পাওয়া যায়।

 

সাবেক ক্রিকেটার ইমরান খান বিগত ২০১৮-তে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হয়েছিলেন। কিন্তু ক্ষমতাশালী পাক সেনাবাহিনীর সঙ্গে দ্বন্দ্বের কারণে তিনি মেয়াদ শেষ করতে পারেননি।

 

আমাদের ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Video