চট্টগ্রাম মেট্টোপলিটন
পুলিশ (সিএমপি) ট্রাফিক-দক্ষিণ বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার এন.এম নাসিরুদ্দিন বলেছেন,
প্রচন্ড গরমে সড়কে যানজট নিরসন, সড়ক নিরাপত্তা, সড়ক শৃঙ্খলা ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা
স্বাভাবিক রাখতে ট্রাফিক পুলিশ নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। গত মে মাসে ডিসি-ট্রাফিকের
নেতৃত্বে টিআই (বাকলিয়া) মো. মনিরুজ্জামান সঙ্গীয় ফোর্সদের নিয়ে শাহ আমানত সেতু (কর্ণফুলী
নতুন ব্রীজ) ও আশপাশের এলাকায় অভিযান চালিয়ে বাস-ট্রাক, টেক্সী, টেম্পু, ম্যাক্সিমা,
হিউম্যান হলার, পিকআপ ও গ্রাম সিএনজিসহ মোট ৪৯৫টি অবৈধ গাড়ি আটক ও বিভিন্ন অপরাধে ১৭৪টি
গাড়ির বিরুদ্ধে মামলা রুজু করে। এজন্য ট্রাফিক পুলিশের উপর ক্ষিপ্ত হওয়ার বিষয়টি অত্যন্ত
দুঃখজনক। সড়কে অবৈধ গাড়ি চলাচল করলেই আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে। কোন রুটে অবৈধ গাড়ি
চলতে দেয়া হবে না।
৬ জুন সোমবার
সকালে নগরীর আইস ফ্যাক্টরী রোডস্থ ট্রাফিক-দক্ষিণ বিভাগের সম্মেলন কক্ষে বিভিন্ন পরিবহন
শ্রমিক সংগঠন নেতৃবৃন্দের সাথে ‘সড়ক নিরাপত্তা ও সড়ক শৃঙ্খলা’ বিষয়ে আয়োজিত
মতবিনিময় সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, সড়কে
বৈধ গাড়ির আড়ালে ফিটনেস ও রুট পারমিটবিহীন কিছু কিছু গাড়ি অবৈধভাবে চলাচল করছে। পুলিশ
কমিশনারের নির্দেশে ডিসি-ট্রাফিকের নেতৃত্বে এসব গাড়ির বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
মে মাসে ৪৯৫টি অবৈধ গাড়ি আটকের জের ধরে টিআই (বাকলিয়া) মো. মনিরুজ্জামানের উপর ক্ষিপ্ত
হয়ে তার বিরুদ্ধে সাংবাদিক সম্মেলনসহ নানান ধরণের ষড়যন্ত্র শুরুর পাশাপাশি আগামী ৮
জুন বৃহস্পতিবার ভোর ৬টা থেকে ২৪ ঘন্টা কর্মবিরতির আহবান করে চট্টগ্রাম অটো টেম্পু
অটো রিক্সা শ্রমিক সমন্বয় পরিষদ।
সভার এক পর্যায়ে
শ্রমিক সংগঠন কর্তৃক টিআই (বাকলিয়া) মো. মনিরুজ্জামানের বিরুদ্ধে এ ধরণের কর্মকান্ডে
ডিসি-ট্রাফিক এন.এম নাসিরুদ্দিনের আপত্তি ও ক্ষোভ প্রকাশের পর শ্রমিক নেতৃবৃন্দরা তাদের
ভূল বুঝতে পেরে আহুত ২৪ ঘন্টার কর্মবিরতি প্রত্যাহার করে নেন।
আলোচনা সভায় পরিবহণ
শ্রমিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দরা ৮ দফা দাবী পেশ করার পর দাবীগুলো সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে
অবহিত করার বিষয়ে আশ্বাস প্রদান করেন ডিসি-ট্রাফিক।
গাড়ির মামলার
জরিমানা সংক্রান্ত বিষয়ে পরিবহণ শ্রমিক নেতৃবৃন্দের বক্তব্যের আলোকে ডিসি নাসিরুদ্দিন
বলেন, সড়ক পরিবহণ আইন-২০১৮ অনুযায়ী ই-ট্রাফিক প্রসিকিউশন এন্ড ফাইন পেমেন্ট সিস্টেমে
অটো জরিমানা নির্ধারণ হয়। একই অপরাধে গাড়ির দ্বিতীয়বার মামলা হলে তার ফাইন ডাবল হয়।
তবে কিছু কিছু ক্ষেত্রে মানবিক বিবেচনায় সিঙ্গেল জরিমানা আদায় করা হয়। ঢাকা-চট্টগ্রাম
বৈষম্য না রেখে প্রত্যেক বিভাগীয় শহরে জরিমানার বিষয়টি সমন্বয় করার জন্য পুলিশ কমিশনারের
মাধ্যমে জানানো হবে।
কর্ণফুলী নতুন
ব্রীজ এলাকায় টার্মিনাল প্রসঙ্গে তিনি বলেন, গাড়ি বেড়েছে, কিন্ত রাস্তা বাড়েনি। এখানে
নির্দিষ্ট কোন টার্মিনাল না থাকার কারণে বিভিন্ন স্থান থেকে আসা গাড়িগুলোতে যাত্রী
উঠা-নামার কারণে মাঝে মাঝে সড়ক শৃঙ্খলা বিঘ্নিত হয়। টার্মিনাল গড়ার বিষয়ে পরিবহন মালিক-শ্রমিক
নেতৃবৃন্দরা সিটি করপোরেশনের মেয়র ও সিডিএ চেয়ারম্যানকে এ বিষয়ে অবগত করতে পারেন। তবে নতুন ব্রীজ এলাকায়
অবৈধ মাইক্রো স্ট্যান্ড দেখা গেলে তাৎক্ষনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে। সড়ক শৃঙ্খল, সড়ক নিরাপত্তা
ও জনগণের নির্বিঘ্ন যাতায়াত নিশ্চিতসহ করার জন্য ট্রাফিক বিভাগ খুবই আন্তরিক। তবে দায়িত্ব
পালন করতে গিয়ে যদি কোন ট্রাফিক পুলিশ সদস্য অনৈতিক কাজে লিপ্ত হয় তাহলে তার বিরুদ্ধে
ব্যবস্থা নেয়া হবে।
ট্রাফিক দক্ষিণ বিভাগের টিআই (প্রশাসন) অনিল বিকাশ চাকমার সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার মো. আকরামুল হাসান, সহকারী পুলিশ কমিশনার মো. মাসুদ রানা, টিআই (বাকলিয়া) মো. মনিরুজ্জামান, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহণ শ্রমিক ফেডারেশন পূর্বাঞ্চল কমিটির সভাপতি মৃণাল চৌধুরী, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহণ শ্রমিক ফেডারেশন চট্টগ্রামের সভাপতি মোহাম্মদ মুছা, সাধারণ সম্পাদক অলি আহমদ, শ্রমিক নেতা জানে আলম, মো. জাহিদ হোসেন, মো. শফি, মো. হারুনুর রশিদ, আহমদ হোসেন, মো. খলিলুর রহমান প্রমূখ।
- মা.সো.
মন্তব্য করুন