চট্টগ্রাম সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ৮ পৌষ ১৪৩১
চট্টগ্রাম সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ৮ পৌষ ১৪৩১

দুর্ঘটনা

ডিপো কর্তৃপক্ষ ও তদারকি সংস্থাগুলোসহ সংশ্লিষ্টদের গাফিলতিতে ডিপোতে থাকা হাইড্রোজেন পার-অক্সাইড নামক রাসায়নিক থেকে এ দুর্ঘটনা ঘটেছে বলে তদন্ত প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়

বিএম ডিপোতে বিস্ফোরণ ঘটেছে হাইড্রোজেন পার-অক্সাইড থেকেই

নিউজ ডেস্ক
প্রকাশিত : বৃহস্পতিবার, ২০২২ জুলাই ০৭, ০২:২১ অপরাহ্ন
গত ৪ জুন রাতে চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড সোনাইছড়ি ইউনিয়নের কেশবপুর গ্রামে অবস্থিত বিএম কন্টেইনার ডিপোতে অগ্নিকান্ডের ঘটনা

সীতাকুন্ডের বিএম কন্টেইনার ডিপোতে অগ্নিকান্ড ও বিস্ফোরণের ঘটনার তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিয়েছে চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার কার্যালয় থেকে গঠিত তদন্ত কমিটি। ডিপো কর্তৃপক্ষ ও তদারকি সংস্থাগুলোসহ সংশ্লিষ্টদের গাফিলতিতে ডিপোতে থাকা হাইড্রোজেন পার-অক্সাইড নামক রাসায়নিক থেকে এ দুর্ঘটনা ঘটেছে বলে তদন্ত প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।

 

এছাড়াও বিএম ডিপো কর্তৃপক্ষের নিরাপত্তা ব্যবস্থায় সমস্যা, ডিপো তদারকিতে অব্যবস্থাপনা, মালিকপক্ষের অবহেলা, দক্ষ জনবলের অভাব, আইএনডিজি কোড না মানা সহ ডেঞ্জারাস কার্গো পরিচালনায় নিয়মনীতি মানা হয়নি বলেও উল্লেখ করা হয় প্রতিবেদনে। ৬ জুলাই বিকেলে চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার মো. আশরাফ উদ্দিনের হাতে প্রতিবেদনটি জমা দেন তদন্ত কমিটির প্রধান মিজানুর রহমান।


প্রতিবেদন সর্ম্পকে তদন্ত কমিটির প্রধান মোহাম্মদ মিজানুর রহমান বলেন, 
আমদেরকে তিনটি বিষয়ে অনুসন্ধান করার নির্দেশনা দেওয়া হয়। এর মধ্যে একটি হলো ডিপোতে ভয়াবহ বিস্ফোরণ ও অগ্নিকাণ্ডের কারণ অনুসন্ধান, দায়দায়িত্ব নির্ধারণ এবং এ ধরনের দুর্ঘটনার প্রতিরোধে করণীয় বিষয়ে সুপারিশ প্রণয়ন। 

 

মোট ২৪জনকে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তদন্ত প্রতিবেদনটি প্রস্তুত করা হয়। যাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় তাদের মধ্যে ৫জন ছিলেন ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী, যারা ঘটনার সময় সেখানে অগ্নিকাণ্ড মোকাবেলায় কাজ করেছেন। প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও এক পরিচালককে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। এর বাইরে আল রাজী কেমিক্যালের মালিক, ওই প্রতিষ্ঠানের জিএম (মার্কেটিং) সহ সিঅ্যান্ডএফ, ফ্রেইট ফরওয়ার্ডার্স, শিপিং লাইন এবং বিএম কন্টেইনার ডিপোর সঙ্গে জড়িতদেরও জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে।

 

ভবিষ্যতে এমন দুর্ঘটনা এড়াতে তদন্ত প্রতিবেদনে আইএনডিজি কোড অনুসরণ, ডেঞ্জারাস কার্গো পরিচালনায় নিয়মনীতি মেনে চলা, কেমিক্যাল ভর্তি কনটেইনার আলাদাভাবে সংরক্ষণ করা, নির্দিষ্ট জায়গায় আমদানি-রপ্তানিতব্য ডিজি কার্গো কিংবা রাসায়নিক পণ্য হ্যান্ডলিং করা, প্রতিটি ডিপোতে আলাদাভাবে বিপজ্জনক রাসায়নিক পণ্য হ্যান্ডলিং ও এর ব্যবস্থাপনা গড়ে তোলা, ডিপোর কর্মীদের দক্ষতা বাড়াতে নিয়মিতভাবে প্রশিক্ষণ ও মহড়ার আয়োজন করা, ডিপো কর্তৃপক্ষের নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা নিশ্চিত করা, সব বেসরকারি কনটেইনার ডিপোতে ফায়ার হাইড্রেন্ট স্থাপন করাসহ ২০টি সুপারিশ করা হয়েছে।

 

উল্লেখ্য, গত ৪ জুন রাতে চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড সোনাইছড়ি ইউনিয়নের কেশবপুর গ্রামে অবস্থিত বিএম কন্টেইনার ডিপোতে অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটে। পরে সেখানে মুহুর্মুহু বিস্ফোরণের ঘটনায় ডিপোর শ্রমিক-কর্মচারী, ফায়ার সার্ভিস কর্মীসহ অর্ধশতাধিক মানুষের মৃত্যু হয়। আহত হয় প্রায় দুই শতাধিক মানুষ।

 

ভয়াবহ এ ঘটনা তদন্তে বিভাগীয় কমিশনার কার্যালয়সহ বিভিন্ন দপ্তর মোট ৬টি তদন্ত কমিটি গঠন করে। ঘটনার ১ মাস পর এ তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়া হয়।


- সংবাদ বিজ্ঞপ্তি

- জা হো ম

আমাদের ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Video