দেশে সাম্প্রদায়িক অপশক্তিগুলোর প্রধান পৃষ্ঠপোষক বিএনপি। তাদের জোট সঙ্গী জামাতে ইসলামিসহ অনেক নেতা যুদ্ধ করার জন্য আফগানিস্তান গিয়েছিল। এ জামাতে ইসলাম ৭১ সালে বাংলাাদেশ রাষ্ট্র চায়নি। তারা হিন্দুদের গণিমতের মাল বলে আখ্যা দিয়েছিল। তাই বিএনপিসহ সকল সাম্প্রদায়িক অপশক্তিকে চিরতরে বর্জন করতে হবে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়ে তুলতে হবে। ২২ জুলাই শুক্রবার চট্টগ্রাম সার্কিট হাউজে বাঁশখলীতে দুষ্কৃতকারীদের অগ্নিসংযোগে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের মাঝে প্রধানমন্ত্রীর আর্থিক অনুদানের চেক বিতরণকালে এসব কথা বলেন তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।
২০০৩ সালের ১৮ নভেম্বর বাঁশখালী উপজেলার কালিপুর ইউনিয়নের সাধনপুরে শীল বাড়িতে দুষ্কৃতিকারী কর্তৃক বাইরে থেকে দরজা-জানালা বন্ধ করে গান পাউডার দিয়ে ঘটানো এ বর্বরোচিত অগ্নিসংযোগের ঘটনায় ১১ জন নিহত ও কয়েকজন আহত হয়। তৎকালীন বিরোধী দলীয় নেতা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘটনার পর বাঁশখালীতে ছুটে যান। তিনি ক্ষমতায় গেলে সব সহযোগিতা করা হবে বলে তখন তাদের প্রতিশ্রতি দিয়েছিলেন। আজকের এ চেক প্রদান সে প্রতিশ্রুতি পূরণের অংশ।
চেক বিতরণকালে তথ্যমন্ত্রী আরো বলেন, ২০০১ সালে ক্ষমতায় এসে বিএনপি সারা দেশে হিন্দুদের উপর তান্ডব চালিয়েছিল। লুটপাট অগ্নিসংযোগ অপহরণসহ নানা অত্যাচার করেছিল। এমন ভয়াবহ অবস্থা হয়ে পড়েছিল যে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ঢাকার বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ের দলীয় কার্যালয়ে আশ্রয়কেন্দ্র খুলতে বাধ্য হয়েছিল। সারা দেশ থেকে নির্যাতিত মানুষজন সে আশ্রয়কেন্দ্রে এসে আশ্রয় নিয়েছিল। তিনি আরো বলেন, বাঁশখালীর ঘটনাও তার ব্যতিক্রম নয়। তাদের অপরাধ তারা অসাম্প্রদায়িক চেতনায় বিশ্বাসী ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সমর্থক। সেখানকার তৎকালীন সংসদ সদস্যের আত্মীয়সহ নিকটস্থ অনেকের নামে অভিযোগ উঠেছিল। জনপ্রতিনিধি হিসেব তিনি তার দায় এড়াতে পারেন না। বাঁশখালীর ঘটনার বিচার এখনো শেষ হয়নি শুনে মন্ত্রী মর্মাহত হন এবং দীর্ঘসূত্রিতা পরিহার করে এ বিচার কাজ ত্বরান্বিত করতে জেলা পিপিসহ সংশ্লিষ্ট সকলের সদিচ্ছা কামনা করেন।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মমিনুর রহমানের সভাপতিত্বে আয়োজিত অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন বাঁশখালী আসনের সংসদ সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরী, সাবেক মেয়র আজম নাছির উদ্দিন, চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান প্রমূখ। সরকারি দপ্তরের বিভিন্ন কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দ, রাজনৈতিক ও শ্রমিক নেতৃবৃন্দসহ অন্যান্যরা এসময় উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে বাঁশখালীতে অগ্নিসংযোগে ক্ষতিগ্রস্ত তেজেন্দ্র লাল শীলের ৩ ছেলে বিমল কান্তি শীল, নির্মল কান্তি শীল ও সুনীল কান্তি শীলের পরিবারকে পরিবার প্রতি ১৫ লক্ষ করে ৪৫ লক্ষ টাকার অনুদানের চেক হস্তান্তর করা হয়।
একইসাথে অনুষ্ঠানে সীতাকুন্ডের বিএম ডিপোতে অগ্নিকান্ডে নিহত ১৩ জনের পরিবারের সদস্যদের মাঝে পরিবার প্রতি ২ লক্ষ টাকা, আহত ৩২ জনকে মাথাপিছু ৫০ হাজার টাকা শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের শ্রমিক কল্যাণ তহবিল থেকে কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের মাধ্যমে মোট ৪২ লক্ষ টাকা প্রদান করা হয়। এসময় যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের যুব কল্যাণ তহবিল হতে চট্টগ্রাম জেলায় নির্বাচিত ১৪টি যুব সংগঠনকে ৪০ হাজার করে ৫ লক্ষ ৬০ হাজার টাকার অনুদানের চেক প্রদান করা হয়। সব মিলিয়ে ৯৫ লক্ষ ৩০ হাজার টাকার চেক হস্তান্তর করা হয়।
- মাইশা ফাইরোজ / মনজু জে হোসাইন
মন্তব্য করুন