চট্টগ্রামের পশুর হাটগুলোতে আসন্ন কোরবানী উপলক্ষে কুষ্টিয়া,
ঝিনাইদহ, মাগুরা, সাতক্ষীরা, গোপালগঞ্জ, ফরিদপুর, রাজশাহী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ,
কুমিল্লাহ, নাটোরসহ অন্যান্য এলাকা থেকে গরু এনেছে বেপারিরা। চট্টগ্রামের বিভিন্ন
পার্বত্য জেলাগুলো থেকেও গরু নিয়ে আসছে বেপারিরা। এর সাথে চট্টগ্রামের হাটহাজারী,
পটিয়া, আনোয়ারা ও বাঁশখালী থেকে নিয়ে আসা গরুও আছে। স্থানীয় বিভিন্ন খামারে
হৃষ্টপুষ্টকৃত প্রচুর গরুও আনা হয়েছে বিক্রির জন্য। এপর্যন্ত প্রায় শতাধিক ট্রাক
গরু প্রবেশ করেছে ঐতিহ্যবাহী সাগরিকা পশুর হাটে। এখনো পথে রয়েছে প্রচুর গরুবাহী
ট্রাক। কোরবানীর আগের দিন পর্যন্ত আসতে থাকবে গরুবাহী ট্রাক।
প্রাণিসম্পদ কার্যালয়ের তথ্যসূত্রে বলা হয়েছে, চট্টগ্রামে
এবার সম্ভাব্য কোরবানির পশুর চাহিদা ৮ লাখ ৮৫ হাজার ৭৬৫টি। এর মধ্যে ৫ লাখ ২৬
হাজার ৪৭৫টি গরু, ৭১ হাজার ৩৬৫টি মহিষ, ১ লাখ ৯৫ হাজার ৭৮৩টি ছাগল, ভেড়া ৫৮ হাজার
৬৯২টি ও অন্যান্য পশু ৮৮টি। এর বিপরীতে কোরবানির জন্য পশুর মজুত হয়েছে ৮ লাখ ৫২
হাজার ৩৫৯টি পশু। ফলে ৩৩ হাজার ৪০৬টি পশুর ঘাটতি রয়েছে। তবে চট্টগ্রামের পশু
খামারগুলো থেকে স্থানীয়ভাবে পশুর চাহিদা পূরণ হবে। চট্টগ্রামে ছোট-বড় মিলিয়ে প্রায়
৩০ হাজার খামার রয়েছে। কয়েক বছরে চট্টগ্রামে গরুর খামারের বেশ বিস্তার ঘটেছে।
বাজারে ভালো দাম পাওয়ায় অনেকেই ঝুঁকছেন এই ব্যবসার দিকে।
গরুর সংকট না-থাকায় দামও সহনীয় থাকবে বলে ক্রেতারা আশাবাদ
ব্যক্ত করলেও বাজারে খুঁটি বাণিজ্যের প্রভাবে গরুর দাম কিছুটা বাড়তি রাখতে হয় বলে
জানায় বেপারিরা। কোরবানীর পশুর হাটগুলোতে
ইজারাদারদের পক্ষ থেকে খুঁটির আকারভেদে এসব খাইনে ১০ থেকে ২০টি গরু রাখা হয়। নিয়ম
হচ্ছে ইজারাদারগণ হাসিলের অর্থ আদায় করতে পারবেন। কিন্তু তারা খুঁটির মূল্য
নেওয়াতে বাড়তি খরচ মেটাতে পশুর দাম বাড়িয়ে দিতে বাধ্য হয় বেপারিরা।
খুঁটির বিনিময়ে টাকা আদায় প্রসঙ্গে সাগরিকা পশুর হাটের
ইজারাদারের প্রতিনিধি বলেন, সাগারিকা যে মূল বাজার সেখানে কোনো খুঁটি বাণিজ্য হয়
না। আমরা কেবল হাসিল আদায় করি। আশেপাশে অনেক মাঠেও গরু বিক্রি হয়। সেখানে যারা মাঠ
ভাড়া নেয় তারা ত্রিপল, পানি এবং লাইটের ব্যবস্থা করেন। এজন্য হয়তো কিছু খরচ নিতে
পারে।
এদিকে নগরে আরো দুটি অস্থায়ী হাট বসিয়েছে চট্টগ্রাম সিটি
কর্পোরেশন (চসিক)। ফলে নগরে এখন অস্থায়ী হাটের সংখ্যা ৯-এ উন্নীত হয়েছে। এর সঙ্গে
আছে তিনটি স্থায়ী হাট। অর্থাৎ নগরে ১১টি স্থায়ী-অস্থায়ী পশুর হাটে চলছে
বেচাকেনা। এছাড়া চট্টগ্রামের উপজেলাগুলোতে বসেছে আরো ২৫৭টি পশুর হাট। সবমিলিয়ে
নগরসহ চট্টগ্রামে ২৪৮টি পশুর হাট বসেছে। এর মধ্যে অস্থায়ী হাট ১৭৬টি।
চট্টগ্রাম জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. নজরুল ইসলাম বলেন, চট্টগ্রামের স্থায়ী-অস্থায়ী ২৪৮ হাট মনিটরিংয়ের লক্ষ্যে ৬৭টি মেডিকেল টিম গঠন করা হয়েছে।
- মা.ফা.
মন্তব্য করুন