প্রকৃতির অপার সৌন্দর্যের
লীলাভূমি আমাদের দেশে রয়েছে প্রায় সতেরশ পর্যটন স্পট। বাংলাদেশে আরো রয়েছে
নয়নাভিরাম প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, সমৃদ্ধ ইতিহাস, বৈচিত্রপূর্ণ সংস্কৃতি, বহুমাত্রিক
জীবনাচার ও উষ্ণ আতিথিয়েতা। কিন্তু এসব বিষয় দেশী-বিদেশী গণমাধ্যমে কমই তুলে ধরা
হয়। মানুষকে কম জানানো হয়। ফলে ক্রমবর্ধমান পর্যটন-শিল্প যে হারে বাড়ার কথা, তা কম
হচ্ছে। তাই পাহাড় সমতল বনভূমি সাগর মহাসাগর উপত্যকা বেষ্টিত দর্শনীয় স্থানসমূহের
বৈচিত্র ও সৌন্দর্য সব মাধ্যমে তুলে ধরতে হবে। বাংলাদেশ মনিটর আয়োজিত ৩ দিনব্যাপী
১৩ তম আন্তর্জাতিক পর্যটন মেলার উদ্বোধনকালে একথা বলেন বেসামরিক বিমান পরিবহন ও
পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মো. মাহবুব আলী।
৫ জানুয়ারি বৃহস্পতিবার
চট্টগ্রামের একটি হোটেলে পর্যটন বিষয়ক প্রকাশনা অনুষ্ঠানে পর্যটন প্রতিমন্ত্রী আরো
বলেন, কোভিডের কারনে পর্যটন-শিল্প কিছুটা বাধাগ্রস্ত হলেও বর্তমানে এ খাতের
উন্নয়নে কাজ চলছে। পর্যটন মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা ও তত্ত্বাবধানে বাংলাদেশ
ট্যুরিজম বোর্ড ইতোমধ্যে ‘ট্যুরিজম রিকভারি প্ল্যান’ ও এ সংশ্লিষ্ট
২০টি গাইডলাইন প্রণয়ন করেছে। আগামী ২০৩০ সাল পর্যন্ত পর্যটন-শিল্পে কি পরিমাণ
কর্মসংস্থান হবে তা নিরুপণের জন্য ন্যাশনাল ট্যুরিজম হিউম্যান ক্যাপিটাল
ডেভেলপমেন্ট স্ট্র্যাটেজি প্রণয়ন করা হয়েছে। জাতীয় পর্যটন নীতিমালা ২০১০ যুগোপযোগী
করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এছাড়া দেশব্যাপী অবকাঠামোগত উন্নয়ন, তথ্যপ্রযু্ক্তির
প্রসার ও আইন-শৃংখলা পরিস্থিতির উন্নয়ন করা হয়েছে। সরকারের এসব যুগান্তকারী পদক্ষেপের
কারনে ২০১৯ সালের ১ কোটি পর্যটক থেকে ২০২২ সালে বেড়ে তা ২ কোটিরও বেশি হয়েছে।
পর্যটন প্রতিমন্ত্রী
বলেন, অভ্যন্তরীন পর্যটকের পাশাপাশি বিদেশী পর্যটক আকর্ষণ করতে কাজ চলছে। এর অংশ
হিসেবে দেশব্যাপী পরিচালিত অন্যান্য কার্যক্রমের পাশাপাশি চট্টগ্রাম অঞ্চলের কক্সবাজারের
সাবরাং নাফ ও সোনাদিয়াতে তিনটি পর্যটন পার্ক তৈরির কাজ শুরু হয়েছে।
বিমানবন্দরসমূহের আধুনিকায়ন ও সক্ষমতা বৃদ্ধি করা হয়েছে। নতুন নতুন টার্মিনাল
নির্মাণ, পুরনো টার্মিনাল সংস্কার, যশোর সৈয়দপুর কক্সবাজার প্রভৃতি বিমানবন্দরকে
নতুনভাবে সাজানো হয়েছে। নতুন
করে আঞ্চলিক সহযোগিতার ক্ষেত্র তৈরির কাজ চলমান রয়েছে। এ লক্ষ্যে পার্শ্ববর্তী
দেশসমূহের সাথে সহযোগিতা সম্প্রসারণ ও আন্তর্জাতিক পর্যটন সংস্থাসমূহের সাথে
যোগাযোগ ও সমন্বয় বৃদ্ধির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। সমঝোতা স্মারক সাক্ষর করা হচ্ছে।
বিদেশী পর্যটক আকর্ষণ করতে পর্যটন পণ্যের উন্নয়ন, ভিসা প্রদান পদ্ধতি সহজীকরণ,
সৃজনশীল ও গতিশীল বিপণন ও পর্যটন সেবার প্রচারে অধিকতর গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। আশা
করা যায় অচিরেই বাংলাদেশের পর্যটন শিল্প বিশ্বের দরবারে আরো জনপ্রিয় হয়ে উঠবে।
মেলা উদ্বোধনকালে
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে পর্যটন প্রতিমন্ত্রী আরো বলেন, জাহাজে করে হজ্বযাত্রী
প্রেরণ বিশ্বে দেশীয় পর্যটন খাতকে আরো আকর্ষণীয় করবে। দেশে বিদ্যমান পর্যটন
স্থানসমুহের পাশাপাশি এ অঞ্চলের কুতুবদিয়া মহেশখালীর সৌন্দর্য গণমাধ্যমে তুলে ধরতে
হবে। তিনি আরো বলেন, সেন্টমার্টিন দ্বীপের প্রবালসহ প্রাকৃতিক সৌন্দর্য অক্ষুণ্ণ
রেখে পর্যটন কার্যক্রম পরিচালনা করতে হবে।
বাংলাদেশ মনিটরের
সম্পাদক কাজী ওয়াহিদুল আলমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম
চেম্বার পরিচালক অঞ্জন শেখর দাশ, ট্যুরিস্ট পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হাসান
ইকবাল, এয়ার এস্ট্রার প্রধান নির্বাহী ইমরান আসিফ, ইউএস বাংলার ম্যানেজার কামরুল
ইসলাম, ব্যাংককের বামরুনগ্রাদ হাসপাতালের মার্কেটিং প্রধান আ্যানা মে ডিয়াল।
৩ দিনব্যাপী এই মেলার টাইটেল স্পন্সর হিসেবে রয়েছে নতুন এয়ারলাইন এয়ার এস্ট্রা। মেলায় বিদেশী ৬টি প্রতিষ্ঠানসহ ৩৫টি স্টল স্থান পেয়েছে। মেলায় ভিজিটরদের জন্য আকর্ষণীয় র্যাফেল ড্রর ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। সবার জন্য উম্মুক্ত এ মেলা প্রতিদিন সকাল ১০টা হতে রাত ৮টা পর্যন্ত খোলা থাকবে। ৭ জানুয়ারি এ মেলা শেষ হবে।
- মা.ফা
মন্তব্য করুন