সরকারের মুক্তিযুদ্ধ
বিষয়ক মন্ত্রী আ.ক.ম মোজাম্মেল হক এমপি বলেছেন, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙ্গালী জাতির
পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। তিনি এ দেশের মাটি ও মানুষকে যেভাবে গভীর ভালোবাসার
বন্ধনে উজ্জ্বীবিত করেছিলেন তা বিশ্বের ইতিহাসে নজীর। ১৯৭১ সালে বঙ্গবন্ধুর আহবানে
সাড়া দিয়ে জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান বীর মুক্তিযোদ্ধারা জীবনবাজি রেখে মহান মুক্তিযুদ্ধে
অংশ নিয়েছেন বলেই আমরা ‘বাংলাদেশ’ নামক একটি স্বাধীন
রাষ্ট্র পেয়েছি। তাঁর জন্ম না হলে আজ আমরা মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে পারতাম না। আজ জাতির
পিতার সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশ উন্নয়নের মহাসড়কে। দেশের
উন্নয়ন কর্মকান্ড বাধাগ্রস্ত করতেই স্বাধীনতা বিরোধীরা আবারও ষড়যন্ত্র করছে। তাদের
বিরুদ্ধে সতর্ক থাকতে হবে।
১৭ জুন শনিবার
চট্টগ্রাম এম.এ আজিজ স্টেডিয়াম সংলগ্ন জিমনেসিয়ামে সম্মিলিত মুক্তিযোদ্ধা সংসদের ব্যানারে
আয়োজিত বিভাগীয় মুক্তিযোদ্ধা সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। জাতীয়
সংগীত, জাতীয় ও সংগঠনের পতাকা উত্তোলন এবং কোরআন তেলাওয়াতের মাধ্যমে সমাবেশের শুভ সূচনা
হয়। সমাবেশে বিভাগের বিভিন্ন জেলা, মহানগর, থানা ও উপজেলা থেকে আগত প্রায় ৫ হাজার বীর
মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ডের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
তিনি আরো বলেন,
সারাদেশে বধ্যভূমি সংরক্ষণের কাজ চলমান রয়েছে। ঢাকার পরে মুক্তিযুদ্ধের সুঁতিকাগার
চট্টগ্রাম। এখানে মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতিসৌধ ও জাদুঘর নির্মাণের বিষয়ে সরকারের মহাপরিকল্পনা
রয়েছে। পাহাড়তলী বধ্যভূমিসহ যে সকল বধ্যভূমি রয়েছে সেগুলোর সংরক্ষণ কাজ দ্রুত সময়ে
সম্পন্ন করা হবে।
উদ্বোধকের বক্তব্যে
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি মন্ডলীর সদস্য ও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত
স্থায়ী কমিটির সদস্য সাবেক মন্ত্রী মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন এমপি বলেন, জাতির
পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানে ডাকে নিরস্ত্র বাঙালি সশস্ত্র যুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন
করেছে। অনেকেই ইতিহাস বিকৃত করে অনেক কথা বলছেন। বঙ্গবন্ধুর নামটাও মুছে ফেলার প্রচেষ্টা
চালিয়েছিলেন। বীর মুক্তিযোদ্ধারাসহ সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। তিনি চট্টগ্রামের জিয়া
জাদুঘরের নাম মুছে ফেলে এটিকে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরে রূপান্তর করতে সরকারের কাছে প্রস্তাব
পাঠানোর বিষয়ে গুরুত্বারোপ করেন।
সভাপতির বক্তব্যে
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি মন্ডলীর সদস্য ও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত
স্থায়ী কমিটির সভাপতি এবং সম্মিলিত মুক্তিযোদ্ধা সংসদের আহবায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা শাজাহান
খান এমপি বলেন, বঙ্গবন্ধু একমাত্র নেতা যিনি সমগ্র বাঙ্গালি জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করতে পেরেছিলেন।
তিনি ছিলেন অসাম্প্রদায়িক। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট নারকীয় হত্যাকান্ডের পর ষড়যন্ত্র থেমে
নেই। আজ তাঁরই সুযোগ্য কন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশে প্রত্যেকটি
উন্নয়ন দৃশ্যমান। দেশের উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত করতে স্বাধীনতা বিরোধী চক্র আবারও সক্রিয়
হয়ে উঠছে। তাদের বিরুদ্ধে স্বোচ্চার থাকতে হবে। সমস্ত ভেদাভেদ ভূলে গিয়ে আপনারা দেশকে
ভালোবাসুন, দেশ বিরোধী ষড়যন্ত্র রুখে দিন। সাম্প্রতিক সময়ে বিএনপি’র তারুণ্যের সমাবেশের
নামে জামালখানে বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল ও মুক্তিযুদ্ধ সংক্রান্ত স্মৃতিফলক ভাংচুরের তীব্র
নিন্দা ও ক্ষোভ প্রকাশ করে তাদের প্রতিরোধে আগামী ২১ জুন সারাদেশে জেলা প্রশাসক ও উপজেলা
নির্বাহী অফিসারদের মাধ্যমে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বরাবরে স্মারকলিপি প্রদানের ঘোষনা
দেন তিনি।
স্বাগত বক্তব্য
রাখেন বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ চট্টগ্রাম মহানগর ইউনিট কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা
মোজাফফর আহমদ। বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ চট্টগ্রাম জেলা সংসদের ভারপ্রাপ্ত কমান্ডার
বীর মুক্তিযোদ্ধা এ.কে.এম সরোয়ার কামাল দুলু ও মহানগরের ডেপুটি কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা
শহীদুল হক চৌধুরী সৈয়দের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত সমাবেশে বিশেষ অতিথি ছিলেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের
উপাচার্য প্রফেসর ড. শিরীণ আখতার, চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান,
মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কেন্দ্রীয় কমান্ড কাউন্সিলের সদ্য সাবেক চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা
মেজর (অব.) হেলাল মোর্শেদ খান বীর বিক্রম, সম্মিলিত মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সদস্য সচিব
বীর মুক্তিযোদ্ধা ওসমান আলী, যুগ্ম সদস্য সচিব বীর মুক্তিযোদ্ধা এবিএম সুলতান আহমেদ
ও ঢাকা মহানগর সম্মিলিত মুক্তিযোদ্ধা সংসদের আহবায়ক যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা আমির
হোসেন মোল্লা। অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কেন্দ্রীয়
কমান্ড কমান্ড কাউন্সিলের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল হাশেম, খাগড়াছড়ি
জেলা কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ রইছ উদ্দিন, ফেনী জেলা কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা
আবদুল মোতালেব, কুমিল্লা জেলা কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা শফিউল আলম বাবুল, নোয়াখালী
জেলা কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা মোজাম্মেল হক মিলন, বিএলএফ কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা
মহিউদ্দিন রাশেদ, বীর মুক্তিযোদ্ধা পান্টু লাল সাহা, বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ নূর উদ্দিন,
মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ড কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি সরোয়ার আলম চৌধুরী মনি
প্রমূখ।
অনুষ্ঠানে আন্দোলন-সংগ্রামে বিভিন্ন অবদানের জন্য সম্মিলিত মুক্তিযোদ্ধা সংসদের পক্ষ থেকে চট্টগ্রাম মহানগর মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা মোজাফফর আহমদের হাতে স্বর্ণপদক তুলে দেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি ও সম্মিলিত মুক্তিযোদ্ধা সংসদের আহবায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা শাজাহান খান এমপি।
- মা.ফা.
মন্তব্য করুন