ঘরে অন্তসত্বা মেয়ে থাকায় প্রতিবেশীকে
উচ্চশব্দে গান বাজাতে নিষেধ করায় নির্মমভাবে খুনের ঘটনায় এজাহারনামীয় প্রধান ৩ আসামী
ছেলে, মা ও বাবাকে চট্টগ্রামের সীতাকুন্ড এলাকা হতে আটক করেছে র্যাব-৭ চট্টগ্রাম।
গত ১ অগাস্ট রাজশাহী মহানগরীর শাহমখদুম এলাকায় এই নির্মম ঘটনাটি ঘটে।
১৪ অগাস্ট দুপুরে চান্দগাঁও ক্যাম্পে আয়োজিত
ব্রিফিং-এ র্যাব-৭ এর অধিনায়ক লে. কর্ণেল এম.এ ইউসুফ পিএসসি জানান, গত ১ অগাস্ট ২০২২
তারিখ রাত সাড়ে ৯টায় রাজশাহী মহানগরীর শাহমখদুম থানার হরিষার ডাইং এলাকার জনৈক নাহিদ
তার বাড়িতে উচ্চশব্দে গান শুনছিল। তাদের প্রতিবেশী মুকুল আলীর (৪৫) মেয়ে অন্তসত্বা
হওয়ায় মুকুল আলী নাহিদকে উচ্চশব্দে গান বাজাতে নিষেধ করেন। নাহিদ তাৎক্ষণিক বক্সের
শব্দ কমিয়ে দেয়ায় মুকুল আলী সেখান থেকে চলে আসার পর আবারও শব্দ বাড়িয়ে দেয়। মুকুল আলী
পুনরায় নাহিদের বাড়িতে গিয়ে উচ্চশব্দে গান বাজাতে নিষেধ করলে নাহিদ, তার বাবা বকুল
আলী, মা ও তার বোন মিলে মুকুলকে গালিগালাজ করে। এক পর্যায়ে নাহিদ ও তার পরিবারের সদস্যরা
লোহার রড দিয়ে মুকুলের মাথায় আঘাত করে। এছাড়া চাকু দিয়ে শরীরের বিভিন্ন জায়গায় আঘাত
করে গুরুতর জখম করে। মুকুলের চিৎকার শুনে তার ছোট ছেলে শাহীন আলম ও জামাই আলমগীর সেখানে
গেলে তাদেরকেও মারধর ও চাকু দিয়ে আঘাত করে জখম করে। পরবর্তীতে স্থানীয়রা মুকুলকে উদ্ধারে
এগিয়ে গেলে আসামীরা পালিয়ে যায়। গুরুতর আহত মুকুলকে উদ্ধার করে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ
(রামেক) হাসপাতালে ভর্তি করলে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাতেই তিনি মারা যান।
এ ঘটনায় নিহত ভিকটিমের ছেলে মো. শামীম
ইসলাম বাদী হয়ে মামলা করার পর এজাহারনামীয় ৪,৫,৬,৭ ও ৮নং আসামীদেরকে রাজশাহী মহানগরীর
শাহমখদুম থানার পুলিশ গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়। কিন্ত ১, ২ ও ৩ নং আসামী গ্রেফতার এড়াতে
রাজশাহী হতে পালিয়ে আত্মগোপনে চলে যায়।
এরই প্রেক্ষিতে র্যাব-৭, চট্টগ্রাম গোয়েন্দা
নজরদারীর মাধ্যমে জানতে পেরে চট্টগ্রাম জেলার সীতাকুন্ড থানাধীন মাদাম বিবিরহাট এবং
উত্তর সলিমপুর এলাকায় অভিযান চালিয়ে হত্যাকান্ডের ১, ২ ও ৩ নং আসামী ১। মো. নাহিদ হোসেন
(২০), পিতা-মো. বকুল আলী, ২। মো. বকুল আলী (৪৫), পিতা- আছের উদ্দিন ও ৩। মোছা. আমেনা
(৪০), স্বামী- মো. বকুল আলী সর্ব সাং- হরিষার ডাইং, থানা- শাহমখদুম, রাজশাহী মহানগরীদেরকে
গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়। পরবর্তীতে উপস্থিত সাক্ষীদের সামনে আটককৃত আসামীরা উল্লেখিত
হত্যা মামলার মূল পরিকল্পনাকারী এবং এজাহার নামীয় প্রধান আসামী বলে স্বীকার করে।
পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য গ্রেফতারকৃত আসামীদের সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তরের কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
- মাঈন উদ্দিন সোহেল
মন্তব্য করুন