চট্টগ্রামে ২১
দিনব্যাপি অমর একুশে বইমেলার পর্দা নেমেছে গতকাল মঙ্গলবার। চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের
সার্বিক সহযোগিতায় চট্টগ্রাম এমএ আজিজ স্টেডিয়াম সংলগ্ন জিমনেসিয়াম চত্বরে আয়োজন করা
হয় অমর একুশ বইমেলা ২০২৩। মেলার সমাপনী ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে চিত্রাঙ্কনসহ অন্যান্য
সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণ, অংশগ্রহণকারী ঢাকা ও চট্টগ্রামের প্রকাশকদের
সনদ প্রদান ও সাজসজ্জায় শ্রেষ্ঠ স্টলকে পুরস্কার প্রদান করা হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি
হিসেবে উপস্থিত ছিলেন তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ এমপি।
২৮ ফেব্রুয়ারি
সন্ধ্যায় আয়োজিত সমাপনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র
বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. রেজাউল করিম চৌধুরী। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন একুশে
পদকপ্রাপ্ত শিল্পী সুবর্ণা মুস্তাফা এমপি।
প্রধান অতিথি
ড. হাছান মাহমুদ বলেন, আবহমান বাংলার সংস্কৃতির সাথে নতুন প্রজন্মকে পরিচিত করতে হলে
তাদের হাতে বই তুলে দিতে হবে। আকাশ সংস্কৃতির কবলে বই’র জায়গা কেড়ে
নিয়েছে সামাজিক মাধ্যম। নতুন প্রজন্মকে গড়তে হলে আমাদের ইতিহাস-ঐতিহ্যের বইগুলো তাদের
হাতে তুলে দিন। তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী আগামীতে এই বইমেলাকে আরো বড় পরিসরে আয়োজনের
জন্য মঞ্চনাটকসহ বিভিন্ন সাংস্কৃতিক কার্যক্রম সংযুক্ত করার পরামর্শ দেন।
সভাপতির বক্তব্যে
মো. রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, বই মানুষকে সংগ্রামী চেতনায় উদ্বুদ্ধ করে। আমাদের মহান
ভাষা আন্দোলন থেকে মুক্তিযুদ্ধ, প্রতিটি ঐতিহাসিক সংগ্রামে জনগণকে ঐক্যবদ্ধ করতে বই
ভূমিকা রেখেছে। মেয়র হিসেবে বীর চট্টলাবাসীর বুদ্ধিবৃত্তিক বিকাশে এই বইমেলার আয়োজন
করেছি আর আগামী বছর এ বইমেলার প্রাঙ্গন আরো বড় করব। মাননীয় মন্ত্রী মহোদয়ের পরামর্শ
অনুসারে আগামী বছর বইমেলায় মঞ্চনাটকসহ সাংস্কৃতিক কর্মকান্ডের পরিধি বাড়াবো।
বিশেষ অতিথি সুবর্ণা
মুস্তাফা বলেন, বইর চোখে ইতিহাস দেখেন পাঠকরা। বঙ্গবন্ধুর লেখা অসমাপ্ত আত্মজীবনী,
কারাগারের রোজনামচা, আমার দেখা নয়াচীন’র মতো বইগুলোর
মাধ্যমে পাঠকরা বঙ্গবন্ধু সম্পর্কে জানতে পারছে, বুঝতে পারছে তৎকালীন ঐতিহাসিক বাস্তবতা।
অনুষ্ঠানে স্বাগত
বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মুহম্মদ
তৌহিদুল ইসলাম। মেলা আয়োজনের সাথে সম্পৃক্ত সবাইকে ধন্যবাদ জানান বইমেলার আহ্বায়ক কাউন্সিলর
নিছার উদ্দিন আহমেদ মঞ্জু। এসময় উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (আইসিটি) আবদুল
মালেক, কাউন্সিলর ছালেহ আহম্মদ চৌধূরী, মো. আবদুস সালাম মাসুম, পুলক খাস্তগীর, সংরক্ষিত
নারী কাউন্সিলর শাহীন আকতার রোজী, রুমকি সেনগুপ্ত, হুরে আরা বেগম।
আরো উপস্থিত ছিলেন
চসিক সচিব খালেদ মাহমুদ, প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম, প্রধান শিক্ষা
কর্মকর্তা লুৎফুন নাহার, মেয়রের একান্ত সচিব ও প্রধান পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা মুহাম্মদ
আবুল হাশেম, আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রেজাউল করিম, শিক্ষা কর্মকর্তা উজালা রানী
চাকমা, উপ-সচিব আশেক রসুল চৌধুরী (টিপু), জনসংযোগ ও প্রটোকল কর্মকর্তা আজিজ আহমদ, ম্যালেরিয়া
ও মশক নিয়ন্ত্রণ কর্মকর্তা মো. শরফুল ইসলাম মাহি, সিবিএর সভাপতি ফরিদ আহমদ এবং সাধারণ
সম্পাদক মজিবুর রহমান। সৃজনশীল প্রকাশনা পরিষদের সভাপতি মহিউদ্দিন শাহ আলম নিপু, সাধারণ
সম্পাদক আলী প্রয়াস।
এবারের মেলার অনুষ্ঠানমালায় ছিল নজরুল দিবস, মাতৃভাষা দিবস-২১ ফেব্রুয়ারি, লোক উৎসব, রবীন্দ্র উৎসব, তারুণ্য উৎসব, নারী উৎসব, বসন্ত উৎসব, মরমী উৎসব, আবৃত্তি উৎসব, নৃগোষ্ঠী উৎসব, লেখক সমাবেশ, যুব উৎসব, শিশু উৎসব, পেশাজীবী সমাবেশ, মুক্তিযুদ্ধ উৎসব, ছড়া উৎসব, কুইজ প্রতিযোগিতা, চাটগাঁ উৎসব, স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র ও আলোকচিত্র প্রদর্শনী, বইমেলার সমাপনী ও পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠান।
- মা.ফা.
মন্তব্য করুন