চট্টগ্রাম সিটি
কর্পোরেশন রাজস্ব সার্কেল-৪ (ওয়ার্ড নম্বর ২৯, ৩০, ৩১, ৩৩ ও ৩৪)-এর এসেসমেন্ট রিভিউ
বোর্ডের গণশুনানী অনুষ্ঠিত হয়েছে। রিভিউ বোর্ডে গৃহকরের জন্য আপিল করে করছাড় পেয়ে সন্তুষ্টচিত্তে
বাড়ি ফিরেন করদাতারা।
১২ মার্চ রবিবার সকালে পুরাতন নগর ভবনের কেবি আব্দুচ ছত্তার মিলনায়তনে করদাতাদের উপস্থিতিতে এ গণশুনানী অনুষ্ঠিত হয়। বিভিন্ন ওয়ার্ডের করদাতারা আপীল শুনানীতে উপস্থিত হলে মেয়র বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. রেজাউল করিম চৌধুরী জানতে চান আপনি কত কর দিতে চান? কেউ বলেন পাঁচশত টাকা, কেউ বলেন এক হাজার টাকা বাড়ান, আবার কেউ আগের পরিমানেই কর দিতে ইচ্ছা পোষণ করলে মেয়র তাদের ইচ্ছা অনুযায়ী কর নির্ধারণ করে দেন।
এ সময় মেয়র বলেন,
কিছু অসাধু লোক নগরীর করদাতাদের মাঝে বিভ্রান্তি ছড়িয়ে ঘোলাপানিতে মাছ শিকার করার অপচেষ্টায়
লিপ্ত রয়েছে, তিনি তাদের ব্যাপারে নগরবাসিকে সতর্ক থাকার আহবান জানান। মেয়র বলেন, আমি
চট্টগ্রামের ছেলে। যে চট্টগ্রামের মানুষেরা আমাকে ভোট দিয়ে মেয়র নিবার্চিত করেছেন,
তারাই গৃহকর নিয়ে ভোগান্তিতে পড়বে এটা আমি কখনো হতে দেব না।
মেয়র আরো বলেন,
২০১৭ সালে যে কর মূল্যায়ন করা হয়েছিল তাতে অনেক অসঙ্গতি ছিল। যার কারণে সাবেক মেয়র
মরহুম এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরীর নেতৃত্বে নগরবাসী আন্দোলন শুরু করলে সরকার তা আমলে নিয়ে
স্থগিত করেছিল। দীর্ঘদিন স্থগিত থাকার পর ২০২২ সালে তা পুনরায় চালু করার জন্য স্থানীয়
সরকার মন্ত্রনালয়ের নির্দেশনা আসে, যে কারণে আবার কর আদায়ের কার্যক্রম শুরু করা হয়।
তিনি বলেন, কর মূল্যায়নের ক্ষেত্রে অসঙ্গতি দূর করার জন্য ৮টি সার্কেলে আপীল বোর্ড
গঠন করা হয়। এর মধ্যে ৭টি সার্কেলের আপীল বোর্ডে আমার উপস্থিতিতে গনশুনানীতে অংশগ্রহন
করে করদাতারা হাসিমুখে বাড়ী ফিরে গেছেন।
প্রসঙ্গক্রমে
তিনি রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনে ২৭%, বরিশালে ২৭%, রংপুরে ২০% এর কথা উল্লেখ করে বলেন
চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনে ১৭% গৃহকর নেয়া হচ্ছে। আন্দোলনকারীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন,
প্রকাশ্য সরকারের ট্যাক্স বন্ধ করে দেয়ার ঘোষনা আইনগত দন্ডনীয় অপরাধ। তিনি বলেন, আইন
ও বিধি না জেনে আন্দোলন করা ঠিক নয়। তিনি আরো বলেন, গৃহকর সম্পর্কে মানুষের মাঝে দীর্ঘদিন
যাবৎ ভুল ধারনা ছিল, তা থেকে বেরিয়ে এসে নগরবাসীকে
গৃহকর প্রদানের আহ্বান জানান ।
এ সময় করদাতাদের
পক্ষে পাথরঘাটার আবুল মুনছুর চৌধুরী বলেন, আমরা অনেক বিভ্রান্তিকর কথা শুনে গৃহকর নিয়ে
ভীত ছিলাম। পরে বিভিন্ন করদাতার পরামর্শে আপীল বোর্ডে আসলে ৯ লক্ষ ২৮ হাজার টাকার ভ্যালুয়েশনকে
মেয়র ২ লক্ষ ৮০ হাজার টাকা করে দিয়েছেন। অপরদিকে পশ্চিম মার্দার বাড়ীর জনৈক মো. এয়াকুব
বলেন, আমার ৫ লক্ষ ৮৮ হাজার টাকার ভ্যালুয়েশনকে মেয়র ১ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা করে দিয়েছেন।
এজন্য তারা মেয়রের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। তারা বলেন, আন্দোলনকারীদের নেতা অশিক্ষিত
ও মুর্খ তারা না জেনে গৃহকর নিয়ে আন্দোলন করছে। চট্টগ্রামে এমন মেয়র পাওয়া আমাদের ভাগ্য
যিনি মানুষকে কথা দিয়ে কথা রাখেন।
আপীল রিভিউবোর্ডের
সভাপতি কাউন্সিলর শহীদুল আলমের সভাপতিত্বে এসময় উপস্থিত ছিলেন কাউন্সিলর হাসান মুরাদ
বিপ্লব, গোলাম মোহাম্মদ জোবায়র, আবদুস সালাম মাসুম, পুলক খাস্তগীর, মেয়রের একান্ত সচিব
মুহাম্মদ আবুল হাশেম, রিভিউ বোর্ডের সদস্য প্রকৌশলী শহীদুল আলম, এড. তৌহিদুল আলম, কর
কর্মকর্তা মো. সারেক উল্ল্যা, উপ-কর কর্মকর্তা হাসান আহমেদ, তুষার কান্তি দাশ, বিপ্লব
কুমার চৌধুরী।
রাজস্ব সার্কেল-৪ এর এসেসম্যান্ট রিভিউ শুনানীতে অংশগ্রহনের জন্য ৩৫০টি নোটিশ প্রদান করা হয়। এতে ৩০০টি আপিল নিস্পত্তি করা করা হয়।
- ই.হো.
মন্তব্য করুন