বাংলাদেশ থেকে মিয়ানমারে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর দ্রুত
প্রত্যাবাসনের জন্য দ্বিপাক্ষিকভাবে এবং আসিয়ান কাঠামোর মধ্যে আরও সক্রিয় ভূমিকা
পালনের জন্য ভিয়েতনামকে অনুরোধ করেছেন পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন। তিনি
আসিয়ানের সেক্টরাল ডায়ালগ পার্টনার হিসেবে বাংলাদেশকে দ্রুত অন্তর্ভুক্ত করার
জন্যও দাবি জানান।
১৪ মে রবিবার ঢাকায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আয়োজিত বাংলাদেশ ও
ভিয়েতনামের মধ্যে দ্বিতীয় ফরেন অফিস কনসালটেশন (এফওসি) আলোচনা সভায় পররাষ্ট্র সচিব
মাসুদ বিন মোমেন এসব কথা বলেন। এতে পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন বাংলাদেশ
প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেন এবং নয় সদস্যের ভিয়েতনাম প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন
দেশটির উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী দো হাং ভিয়েত।
সভায় ব্যবসা-বাণিজ্য, বিনিয়োগ, জ্বালানি, হালাল বাণিজ্য,
পর্যটন ও সংস্কৃতি, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তা, কৃষি, মৎস্য ও
প্রাণিসম্পদ, আইসিটি টেলিযোগাযোগ এবং সরাসরি বিমান যোগাযোগের ক্ষেত্রে সহযোগিতাসহ
দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের সার্বিক দিক উঠে এসেছে। আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে
পারস্পরিক স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয়েও প্রতিনিধি দল মতবিনিময় করেন। উভয় পক্ষই আশাবাদ
ব্যক্ত করেছে যে প্রায় ছয় বছরের বিরতির পর অনুষ্ঠিত এফওসি বিদ্যমান দ্বিপাক্ষিক
সম্পৃক্ততায় আরও জোরদার ও গতিশীল করতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে।
এফওসি দুই দেশের মধ্যে ক্রমাগত ক্রমবর্ধমান দ্বিপাক্ষিক
বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে, বিশেষ করে বাংলাদেশের এলডিসি উত্তরণের
প্রেক্ষাপটে আরও উপাদান যোগ করার জন্য একটি দ্বিপাক্ষিক এফটিএ সমাপ্ত করার
সম্ভাবনাগুলো খুঁজে বের করতে সম্মত হয়েছে।
প্রত্যক্ষ বিদেশী বিনিয়োগের জন্য বাংলাদেশের দেয়া লাভজনক
প্রণোদনা ও সুযোগ-সুবিধাগুলো তুলে ধরে পররাষ্ট্র সচিব ভিয়েতনামের ব্যবসায়ী
সম্প্রদায় এবং উদ্যোক্তাদের পারস্পরিক সুবিধার জন্য বিশেষ করে বাংলাদেশের
অর্থনৈতিক অঞ্চলে সুযোগগুলো গ্রহণ করতে উৎসাহিত করেন।
উভয় পক্ষ উচ্চ-পর্যায়ের নিয়মিত সফর বিনিময়ের মাধ্যমে
সম্পর্কের গতিশীলতা বজায় রাখার গুরুত্বের ওপর জোর দেয় এবং এ বছর ঢাকায় যৌথ বাণিজ্য
কমিশনের সভা আয়োজনে সম্মত হয়।
বাংলাদেশ ব্যাপক সহযোগিতার জন্য পররাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ে যৌথ
কমিশন গঠনেরও প্রস্তাব করেছে। উভয় পক্ষই ব্যবসা, বাণিজ্য ও বিনিয়োগের সুবিধার্থে
এবং পর্যটন ও জনগণের মধ্যে যোগাযোগকে ত্বরান্বিত করার জন্য সরাসরি বিমান সংযোগের
গুরুত্বের ওপর জোর দিয়েছে।
ঢাকা এবং হ্যানয় উভয়ই দ্রুততম সময়ে সরাসরি ফ্লাইট চালু করার
সম্ভাবনা অন্বেষণ করতে সম্মত হয়েছে। এই বছর বন্ধুপ্রতীম দুই দেশের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্কের
সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে বৈঠকটি ঢাকা ও হ্যানয়ে স্মারক অনুষ্ঠানের সঙ্গে যৌথ
সন্ধিক্ষণ উদযাপনের প্রশংসা করে।
প্রতিনিধিদলের আশা এই দ্বিতীয় এফওসি বিদ্যমান চমৎকার দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে আরো সহযোগিতামূলক এবং গঠনমূলক এবং ফলপ্রসূ করে তুলতে আরো জোরালো ও গতিশীলতা আনতে সাহায্য করবে।
- মা.ফা.
মন্তব্য করুন