তাইওয়ান সঙ্কট নিয়ে বিশ্বব্যাপী উদ্বেগের মাঝেই চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই এক সফরে গতকাল শনিবার ঢাকায় পৌঁছেছেন।
তাঁর এ সফর এমন এক সময়ে
ঘটছে, যখন তাইওয়ানকে ঘিরে চীন নজিরবিহীন এক সামরিক মহড়া চালাচ্ছে।
ঢাকা থেকে বিবিসি সূত্রে
জানা গেছে, দুদিনের এই সফরে চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ.
কে. আব্দুল মোমেনের সঙ্গে বৈঠক করবেন।
এছাড়া, প্রধানমন্ত্রী শেখ
হাসিনার সাথেও আজ রোববার তাঁর বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে বলে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
চীনা মন্ত্রীর এ সফরে দুদেশের
দ্বিপাক্ষিক বিষয় ছাড়াও তাইওয়ান ইস্যুও গুরুত্ব পাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
সংবাদদাতারা জানাচ্ছেন,
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাথে সাম্প্রতিক উত্তেজনার পটভূমিতে বেইজিং সরকার চাইছে ঢাকা
যেন তাদের পাশে থাকে।
অন্যদিকে, আমেরিকার নেতৃত্বে
কোন সামরিক জোটে বাংলাদেশ যাতে অংশ না নেয় সেটিও চীন নিশ্চিত করতে চায় বলে কর্মকর্তারা
ইঙ্গিত দেন।
গত বছর ঢাকায় চীনা রাষ্ট্রদূত
বলেছিলেন, যুক্তরাষ্ট্র, জাপান, অস্ট্রেলিয়া ও ভারতের মধ্যে জোট ‘কোয়াড’-এ
বাংলাদেশের অংশগ্রহণ চীন ও বাংলাদেশের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে যথেষ্ট খারাপ করবে।
এদিকে, চীনের পররাষ্ট্র
মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র হুয়া চুনিং শুক্রবার বেইজিংয়ে এক বিবৃতিতে বলেছেন, আব্দুল
মোমেনের সাথে বৈঠকে চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রী দ্বিপাক্ষিক, আঞ্চলিক এবং আন্তর্জাতিক বিষয়ে
আলোচনা করবেন, যেখানে দুদেশের স্বার্থ জড়িত আছে।
তাঁর এ সফরে বেশ কয়েকটি
সমঝোতা স্মারক ও দলিল স্বাক্ষরিত হওয়ার কথা রয়েছে।
এর মধ্যে রয়েছে পিরোজপুরে
অষ্টম বাংলাদেশ-চায়না ফ্রেন্ডশিপ সেতুর হস্তান্তর সনদ, দুর্যোগ মোকাবিলা সহায়তার
জন্য পাঁচ বছর মেয়াদি সমঝোতা স্মারকের নবায়ন, সাংস্কৃতিক সহযোগিতা স্মারকের নবায়ন
এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও চীনের ফার্স্ট ইন্সটিটিউট অব ওশেনোগ্রাফির মধ্যে মেরিন সায়েন্স
নিয়ে সমঝোতা স্মারক।
বাংলাদেশের কর্মকর্তারা
বলছেন, ঢাকার দিকে চীনের কাছে সবচেয়ে বড় প্রত্যাশা হচ্ছে রোহিঙ্গা সংকটের সমাধান।
কয়েক বছর আগে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের জন্য চীনের মধ্যস্থতায় চুক্তি হয়েছিল এবং চেষ্টাও
হয়েছিল। কিন্তু সেটি কোনো কাজে লাগেনি।
ঢাকা চাইবে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের
বিষয়ে চীন যাতে আরও জোরালো ভূমিকা রাখে। কারণ মিয়ানমারের উপর চীনের জোরালো রাজনৈতিক
ও অর্থনৈতিক প্রভাব আছে।
এছাড়া বাংলাদেশের অর্থনৈতিক
উন্নয়নে যাতে চীনের সাহায্য অব্যাহত থাকে সেটিও আশা করে বাংলাদেশ, বিশেষ করে অবকাঠামো
খাতে।
তাছাড়া চীনের বিনিয়োগ
আকর্ষণ করাটাও বাংলাদেশের অন্যতম লক্ষ্য।
মন্তব্য করুন