দৈনিক বাংলার সম্পাদক ও একুশে
পদক প্রাপ্ত বর্ষীয়ান সাংবাদিক তোয়াব খান আর নেই। গতকাল ১ অক্টোবর দুপুর সাড়ে ১২টার
দিকে রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালে তিনি শেষনিঃশ্বাস ত্যাগ করেন (ইন্না লিল্লাহি
... রাজিউন)।
তাঁর বয়স হয়েছিল ৮৭ বছর। ১৯৩৪-এর
২৪ এপ্রিল সাতক্ষীরা জেলার রসুলপুর গ্রামে তিনি জন্ম নেন। সাংবাদিক হিসেবে তাঁর কর্মজীবন
ছিল সুদীর্ঘ ও বর্ণাঢ্য।
দৈনিক বাংলার বিশেষ প্রতিনিধি
হারুন আল রশিদ বাসস-কে জানান, বার্ধক্যজনিত
জটিলতায় তাঁকে ইউনাইটেড হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। কিন্তু দুপুর ১২টা ৪০ মিনিটে
কর্তব্যরত চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।
ছাত্রজীবন থেকেই তোয়াব খান তৎকালীন
বিভিন্ন পত্রিকায় সমকালীন ইস্যু নিয়ে লেখালেখি করতেন। ২০১৬-তে একুশে পদক পাওয়া তোয়াব
খানের সাংবাদিকতা জীবনের শুরু ১৯৫৩ সালে সাপ্তাহিক জনতার মাধ্যমে। ১৯৫৫-তে যোগ দেন
দৈনিক সংবাদে। ১৯৬১-তে তিনি দৈনিক সংবাদের বার্তা সম্পাদক হন। এরপর ১৯৬৪-তে যোগ দেন
দৈনিক পাকিস্তানে।
দেশ স্বাধীন হওয়ার পর দৈনিক পাকিস্তান
থেকে বদলে যাওয়া দৈনিক বাংলার প্রথম সম্পাদক ছিলেন তোয়াব খান। ১৯৭২-এর ১৪ জানুয়ারি
তিনি দৈনিক বাংলার সম্পাদকের দায়িত্ব গ্রহণ করেন। ১৯৭৩ থেকে ১৯৭৫ পর্যন্ত তিনি জাতির
পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রেস সচিব ছিলেন। পরে রাষ্ট্রপতি এইচ. এম. এরশাদ
এবং প্রথম অন্তর্বতীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা সাহাবুদ্দীন আহমদের প্রেস সচিবের
দায়িত্বও পালন করেন তিনি।
সরকারের প্রধান তথ্য কর্মকর্তা
এবং প্রেস ইনস্টিটিউট অব বাংলাদেশ (পিআইবি)-এর মহাপরিচালকের দায়িত্বও পালন করেন এই
যশস্বী সাংবাদিক।
মুক্তিযুদ্ধের সময় স্বাধীন বাংলা
বেতার কেন্দ্রে শব্দসৈনিকের ভূমিকা পালন করেন তোয়াব খান। সেসময় তাঁর আকর্ষণীয় উপস্থাপনায়
নিয়মিত প্রচারিত হয় ‘পিন্ডির প্রলাপ’ নামের অনুষ্ঠান।
দৈনিক জনকণ্ঠের শুরু থেকে গত বছরের
অক্টোবর পর্যন্ত পত্রিকাটির উপদেষ্টা সম্পাদক ছিলেন তিনি। এরপর নিয়েছিলেন নতুন আঙ্গিক
ও ব্যবস্থাপনায় প্রকাশিত দৈনিক বাংলার সম্পাদকের দায়িত্ব, এবং আমৃত্যু এই পদে
অধিষ্ঠিত ছিলেন।
মন্তব্য করুন