ইরাকে মিরসরাইয়ের
এক প্রবাসীকে জিম্মি ও নির্মম প্রহার করে চাঁদা আদায় ও মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানির বিচার
চেয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছেন ভূক্তভোগি আবদুল মান্নান নিজামী।
৯ডিসেম্বর শনিবার
সকালে উপজেলার জোরারগঞ্জের ওচমানপুর ইউনিয়নস্থ নিজ বাড়ীতে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে
লিখিত বক্তব্যে আবদুল মান্নান নিজামী জানান, “আমার একমাত্র
ছেলে মো. ফাহিম উদ্দিনের (২৮) সাথে দেশে ব্যবসা করার সময় ফেনী সদর থানার খাইয়রা এলাকার
সুবলপুর গ্রামের হাজী বাদশা মিয়া বাড়ীর পেয়ার আহাম্মদের মেয়ে ফ্লোরা আক্তার জুথির
(২১) সাথে ২০১৭ সালে বিয়ে হয়। বিয়ের পর শশুরপক্ষ ছেলের ব্যবসায় অবৈধ হস্তক্ষেপ করায়
মারাত্মক লোকসানের সম্মুখীন হয় ফাহিম। একপর্যায়ে শশুরের পরামর্শে স্ত্রীকে নিয়ে সে
শশুর বাড়ীতে চলে যায়। পরে তারা পূর্বে থেকে ইরাকে অবস্থান করা মানি লন্ডারিং এবং মানব
পাচার কারবারের সাথে জড়িত তাদের নিকটাত্মীয়দের মাধ্যমে ২০১৮ সালে আমার ছেলেকে ইরাকে
পাঠায়। এরপর সে ২০২৩ সালে দেশে ফিরে প্রবাস থেকে পাঠানো টাকা, ব্যবসার টাকা এবং প্রবাস
থেকে আসার সময় সাথে আনা টাকা ও স্বর্ণালংকারের হিসেব চাইলে তার স্ত্রী এবং শশুরের সাথে
বাক-বিতন্ডা হওয়ায় তাদের সম্পর্কের অবনতি ঘটে। তার জের ধরে চলতি বছরের গত ২৩ আগস্ট
ফেনী জেলার সোনাগাজী এলাকায় তার ভায়রার আত্মীয় ফোন করে তাকে সোনাগাজী নিয়ে যায়। সেখানে
তাকে জিম্মিকরে ৮টি ননজুডিসিয়াল স্টাম্পে এবং মার্কেন্টাইল ব্যাংকের ১টি ব্ল্যাংক চেকে
জোরপূর্বক স্বাক্ষর আদায় করে। এর ২ দিন পর আমার ছেলে ইরাকে পৌঁছায়। এর কয়েকদিন পর তার
ভায়রা ও তাদের সন্ত্রাসী বাহিনী আমার ছেলেকে ইরাকের কুর্দিস্থান এলাকা থেকে অপহরণ করে
অজ্ঞাতস্থানে আটক রেখে নির্মম প্রহার করে। আমাদেরকে তার নির্যাতনের ভিডিও দেখিয়ে ৫০
লক্ষ টাকা চাঁদা দাবী করে। পরে ছেলেকে বাঁচাতে আমি তাদের দেয়া ১টি হিসাব নম্বরে ২ ধাপে
৪ লক্ষ টাকা প্রদান করি। এরপরও নির্যাতন অব্যাহত রাখায় তাদের পরামর্শে ফের সোনাগাজীতে
গেলে গত ৩০ সেপ্টেম্বর আমার ব্যাংকের ১টি চেকে ১৬ লক্ষ টাকা উল্লেখ করে স্বাক্ষর গ্রহণ
করে এবং আমার ছেলের নামীয় ৩টি ব্যাংক হিসাবের ৬টি ব্ল্যাংক চেক নিয়ে নেয়। এছাড়া ৩শ
টাকার একটি স্টাম্পে ভুয়া ব্যবসায়ীক চুক্তিনামা লিখে আমাকে জিম্মাদার হিসেবে স্বাক্ষর
গ্রহণ করে। এছাড়া আমি, আমার স্ত্রী ও কন্যাদের নামে আমার পুত্রবধূ বাদী হয়ে যৌতুক আইনে
ফেনী আদালতে মামলা দায়ের করে। এসব ঘটনার সুষ্ঠু বিচার দাবী করে আমি গত ৫ ডিসেম্বর ফেনী
জেলার সিনিয়র জুড়িসিয়াল আদালতে ৮ জনকে বিবাদী করে (মামলা নং ১৪৯০/২৩) ১টি মামলা দায়ের
করি। মামলাটি ফেনী জেলা সিআইডি তদন্ত করছে। আমি আপনাদের লেখনির মাধ্যমে এই ঘটনার তদন্ত
স্বাপেক্ষে সুষ্ঠু বিচার দাবী করছি।” সংবাদ সম্মেলনে
তার ভায়রা আবুল কালাম ও মেয়ের জামাই আবুল বশর উপস্থিত ছিলেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে অভিযুক্ত পেয়ার আহাম্মদ বলেন, আমি এসব ঘটনার বিষয়ে কিছুই জানি না। এসব অভিযোগ মিথ্যা।
- নাছির উদ্দিন,
মিরসরাই