জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গারা তাদের মাতৃভূমি মিয়ানমারে মর্যাদাপূর্ণভাবে প্রত্যাবাসিত হোক, বাংলাদেশ ও জাপান উভয় দেশই এটা চায়।
জাপানের পররাষ্ট্র বিষয়ক সংসদীয় ভাইস মিনিস্টার হোন্ডা তারো এবং জাপান
ইন্টারন্যাশনাল কর্পোরেশন এজেন্সি (জাইকা)’র প্রেসিডেন্ট তানাকা আকিহিতো
গতকাল ২৪ জুলাই বিকেলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে গণভবনে সৌজন্য সাক্ষাৎকালে
রোহিঙ্গা ইস্যু নিয়ে আলোচনা হয়।
পরে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম এ বৈঠকে আলোচিত বিষয়ের
ব্যাপারে সাংবাদিকদের অবহিত করেন।
বৈঠকে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী রোহিঙ্গাদের তাদের মাতৃভূমি মিয়ানমারে
প্রত্যাবাসনে জাপানের সহায়তা চেয়েছেন। তিনি বলেন, “রোহিঙ্গারা বাংলাদেশে আশ্রয়
নেওয়ার পর বেশ কয়েক বছর কেটে গেছে এবং তারা এখন আমাদের জন্য বোঝা হয়ে উঠেছে।“
জবাবে জাপানের পররাষ্ট্র বিষয়ক সংসদীয় ভাইস মিনিস্টার হোন্ডা তারো বলেন,
জাপানও রোহিঙ্গাদের মর্যাদাপূর্ণ প্রত্যাবাসন চায় এবং তাঁর দেশ এই ইস্যুতে বাংলাদেশকে
সমর্থন করছে।
বাংলাদেশ ও জাপানের উভয় নেতাই দুই দেশের মধ্যকার অর্থনৈতিক উন্নয়ন সহযোগিতা
নিয়ে আলোচনা করেন।
জাপানের মন্ত্রী ও জাইকা প্রেসিডেন্ট নিজস্ব অর্থায়নে বহুল আলোচিত পদ্মা
সেতু নির্মাণের জন্য বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীকে অভিনন্দন জানিয়ে বলেন, সেতুটি বাংলাদেশের
সার্বিক উন্নয়নকে ত্বরান্বিত করবে।
শেখ হাসিনা বলেন, পদ্মা সেতু ও যমুনা নদীর ওপর নির্মিত বঙ্গবন্ধু সেতু
দেশের দক্ষিণ ও উত্তরাঞ্চলকে দেশের অবশিষ্ট অংশের সঙ্গে যুক্ত করেছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাপান বাংলাদেশের তিনটি মেগা প্রকল্প বাস্তবায়ন
করছে, মহেশখালীতে কয়লাচালিত মাতারবাড়ি বিদ্যুৎকেন্দ্র, মেট্রোরেল এবং ঢাকার হজরত শাহজালাল
আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে তৃতীয় টার্মিনাল, যা বাংলাদেশের উন্নয়নে বিশেষভাবে সহায়ক হবে।
জবাবে, জাইকা প্রেসিডেন্ট এ তিনটি মেগা প্রকল্প বাস্তবায়নে বাংলাদেশ
সরকারের সর্বাত্মক সহায়তার প্রশংসা করে।
জাপানের নেতা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী নেতৃত্বে স্বল্পোন্নত
দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে বাংলাদেশের উত্তরণেরও প্রশংসা করেন।
বাংলাদেশি ও জাপানি উভয় নেতা ২০১৪-তে জাপানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শিনজো
আবে’র বাংলাদেশে সফরের কথা স্মরণ করেন।
শেখ হাসিনা আবে’র হত্যাকা-ের নিন্দা করেন এবং তাঁকে বাংলাদেশের একজন মহান বন্ধু হিসেবে
বর্ণনা করেন।
জাপানের নেতা বলেন, শিনজো আবে’র বাংলাদেশ সফর বাংলাদেশ
ও জাপানের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে একটি ব্যাপক অংশীদারিত্বে উন্নীত করেছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১৯৭৩
সালের অক্টোবরে জাপান সফর আজকের বাংলাদেশ-জাপান সম্পর্কের ভিত্তি তৈরি করেছিল।
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু জাপানের আর্থ-সামাজিক ও প্রযুক্তিগত অগ্রগতির
একজন প্রশংসাকারী ছিলেন এবং তিনি একটি কৃষিভিত্তিক দেশকে শিল্পোন্নত দেশে রূপান্তরের
জন্য জাপানি মডেলের অনুকরণ করতে চেয়েছিলেন।
এ বৈঠক চলাকালে প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ড. আহমদ কায়কাউস এবং বাংলাদেশে
জাপানের রাষ্ট্রদূত ইতো নাওকি উপস্থিত ছিলেন।