দলীয় শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগে বরিশালে-৪ (হিজলা-মেহেন্দিগঞ্জ) আসনের সংসদ সদস্য
পঙ্কজ নাথকে দলীয় সকল পদ থেকে অব্যাহতি দিয়েছে আওয়ামী লীগ।
তবে দলীয় পদ থেকে অব্যাহতি দেয়া হলেও পঙ্কজ নাথের সংসদ সদস্যপদ বাতিল হবে
না। কারণ আইন অনুযায়ী দল থেকে বহিষ্কার করা না হলে অথবা সংসদে দলের বিপক্ষে ভোট না
দিলে সংসদ সদস্যপদ খারিজ হয় না।
আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয় থেকে পঙ্কজ নাথকে পাঠানো এক চিঠিতে জানানো
হয়েছে, দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে তাঁকে বরিশালের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্যপদসহ দলীয়
সব পদ থেকে অব্যাহতি দেয়া হল।
এ বিষয়ে তাঁকে পরবর্তী ১৫ দিনের মধ্যে দলের কেন্দ্রীয় দপ্তর বিভাগে লিখিত জবাব
দেয়ার জন্য বলা হয়েছে।
অবগতির জন্যে চিঠিটির অনুলিপি পাঠানো হয়েছে বরিশাল জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি
আবুল হাসানাত আবদুল্লাহ ও সাধারণ সম্পাদক তালুকদার মো. ইউনুসের কাছেও।
পঙ্কজ নাথ ২০১২-তে আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক মনোনীত হন,
এবং ওই পদে থাকাকালেই ২০১৮’র নির্বাচনে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। কিন্তু সরকারের ক্যাসিনো বিরোধী অভিযান
শুরুর পর ২০১৯-এর ৩১ অক্টোবর তাঁকে সাধারণ সম্পাদকের পদ থেকে সরিয়ে দেয়া হয় এবং
এমনকি সাংগঠনিক কর্মকাণ্ড বা সম্মেলনের কাজ থেকেও তাঁকে বিরত থাকতে নির্দেশ দেয়া হয়।
দলীয় সকল পদ থেকে অব্যাহতির ব্যাপারে পঙ্কজ গণমাধ্যমকে বলেছেন, “আমি নোটিস পেয়েছি। আপাতত এর বেশি
বলতে চাই না।”
আওয়ামী লীগ নেতারা জানিয়েছেন, পঙ্কজ নাথ বরিশাল জেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা
পরিষদের সদস্য ছাড়া দলীয় আর কোনো পদে ছিলেন না ।
নাম না প্রকাশের শর্তে আওয়ামী লীগের নেতারা জানিয়েছেন, স্থানীয় আওয়ামী লীগে
গ্রুপিং তৈরি করা, বিশৃঙ্খল পরিবেশ তৈরি করা, নেতা-কর্মীদের মধ্যে বিরোধ সৃষ্টি
কয়রার মতো অভিযোগ উঠেছিল পঙ্কজ নাথের বিরুদ্ধে।
বিশেষ করে হিজলা-মেহেন্দিগঞ্জে পঙ্কজ নাথের আশ্রয়ে প্রশ্রয়ে আওয়ামী লীগের মধ্যে
একাধিক গ্রুপ তৈরি হয়েছিল। সেসব গ্রুপের সদস্যদের বিরুদ্ধে সহিংসতা,পাল্টাপাল্টি ধাওয়া
ও সংঘর্ষের অভিযোগ রয়েছে। গত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে এসব সংঘর্ষে হতাহতের ঘটনাও ঘটে।
এমনকি সর্বশেষ গত ২৮ আগস্ট মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের দুটি গ্রুপের একটি
হাসপাতালের ভেতরে ঢুকে অন্য গ্রুপটিকে মারধর ও জখম করে। হামলাকারীরা পঙ্কজ নাথের অনুসারী
বলে অভিযোগ রয়েছে। নেতাকর্মীদের একাংশ তাঁর বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন করেছিল।
তবে পঙ্কজ নাথ বলেছিলেন, তিনি স্থানীয় রাজনীতির শিকার।