পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্র নায়কের হত্যাকাণ্ড দেখেছি। কিন্তু নিষ্পাপ শিশু ও অন্তঃসত্ত্বা নারীসহ সপরিবারে হত্যা করা হয়েছে, এমন নজির নেই। নিকৃষ্টতম এ হত্যাকান্ড জাতির জন্য একটি কলঙ্ক-অধ্যায়। বঙ্গবন্ধু ও তাঁর পরিবারবর্গ হত্যাকান্ডের সাথে জড়িতদের বিচার না করার জন্য ‘ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ’ আইন প্রণয়ন করা হয়েছিলো। এতে প্রমাণিত হয় যে, আগামী দিনের অগ্রযাত্রাকে রোধ করার জন্য এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ধ্বংস করার জন্য পরিকল্পিতভাবে ন্যাক্কারজনক হত্যাকান্ড ঘটিয়েছিলো। জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ তার পরিবারের শাহাদত বরণকারীদের সকল সদস্যের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করে সভাপতির বক্ত্যবে এসব কথা বলেন চেয়ারম্যান নিখিল কুমার চাকমা।
তিনি আরো বলেন, আত্মস্বীকৃত খুনি ১২ জনের মধ্যে ৬ জনের ফাঁসি হয়েছে, ১ জন বিদেশে মারা গেছে আর বাকি ৫ জন এখনো পলাতক রয়েছে। বাকি খুনিদের দেশে ফিরিয়ে এনে সর্বোচ্চ শাস্তি প্রদানের দাবি জানাচ্ছি।
১৫ আগস্ট সোমবার শোক দিবস উপলক্ষে পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের কর্ণফুলী সম্মেলন কক্ষে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৭তম শাহাদত বার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষ্যে পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের ব্যবস্থাপনায় শোক দিবসের আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান নিখিল কুমার চাকমার। জাতীয় কর্মসূচির সাথে সামঞ্জস্য রেখে তার নেতৃত্বে সকাল ৮.৪৫ মিনিটে রাঙ্গামাটি সদর উপজেলায় ও বোর্ডের প্রধান কার্যালয়ে স্থাপিত জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে পুস্পস্তবক অর্পনসহ ১ মিনিট নিরবতা পালনের মাধ্যমে গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়।
এ সময় বোর্ডের ভাইস চেয়ারম্যান জনাব মোহাম্মদ নুরুল আলম চৌধুরী (অতিরিক্ত সচিব), বোর্ডের সদস্য প্রশাসন জনাব ইফতেখার আহমেদ (যুগ্মসচিব), সদস্য বাস্তবায়ন জনাব মোহাম্মদ হারুন-অর-রশীদ (উপসচিব), সদস্য পরিকল্পনা জনাব মো. জসীম উদ্দিন (উপসচিব)সহ বোর্ডের উর্দ্ধতন কর্মকর্তা ও কর্মচারীবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
আয়োজিত আলোচনা সভার শুরুতে বঙ্গবন্ধুর জীবনী ও কর্মবিষয়ক স্বল্প দৈর্ঘ্য প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন এবং পবিত্র ধর্মগ্রন্থ কোরআন থেকে তেলাওয়াতসহ পবিত্র ত্রিপিটক ও পবিত্র গীতা ধর্মগ্রন্থ থেকে পাঠ করা হয়। এতে ত্রিপুরা অনুষ্ঠানের পর্ব উপস্থাপনা করেন বোর্ডের তথ্য অফিসার মিজ্ ডজী।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তাঁর পরিবারের সকল শহীদের আত্মার মাগফিরাত কামনায় এবং বৈশ্বিক সংকট পরিস্থিতি উত্তরণ কামনায় বোর্ডের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অংশগ্রহণে সকালে রাঙ্গামাটির তবলছড়িস্থ আনন্দ বৌদ্ধ বিহারে বিশেষ প্রার্থনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। এছাড়া দুপুরে বোর্ডের জামে মসজিদে বিশেষ মোনাজাত ও দোয়া মাহ্ফিল ও তবারক বিতরণ করা হয় এবং তবলছড়িস্থ শ্রী শ্রী রক্ষাকালি মন্দিরে বিশেষ প্রার্থনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। স্ব স্ব জেলা পর্যায়ের কর্মসূচির সাথে সাম্যঞ্জস্য রেখে পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের ইউনিট অফিস সমূহের নিকটবর্তী মসজিদ, মন্দির ও বৌদ্ধ বিহারে শহীদদের আত্মার মাগফিরাত ও শান্তি কামনা করে বিশেষ দোয়া মাহ্ফিল ও তবারক বিতরণ করা হয়। পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের আওতাধীন পার্বত্য চট্টগ্রাম এলাকার টেকসই সামাজিক সেবা প্রদান প্রকল্প পরিচালিত ৪টি আবাসিক বিদ্যালয়ে যথাযোগ্য মর্যাদায় সীমিত পরিসরে দিবসটি পালন করা হয়।
- মা.সো