ধর্ম যার যার উৎসব সবার। আর কয়েকদিন পরেই সনাতন ধর্মের সর্ববৃহৎ ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা। এ উৎসবকে ঘিরে দেশের উন্নয়ন বিরোধী একটি মহল সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট করতে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে। গত বছর দুর্গাপূজা চলাকালীন কুমিল্লায় ফেসবুক ও অন্যান্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তারা অপপ্রচার চালিয়ে দেশকে অস্থিতিশীল করতে চেয়েছিল, কিন্তু তা সফল হয়নি। ২৭ সেপ্টেম্বর মঙ্গলবার সকালে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন আয়োজিত সামাজিক সম্প্রীতি সমাবেশে সভাপতির বক্তব্যে একথা বলেন চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ মমিনুর রহমান।
অসাম্প্রদায়িক চেতনায় ধর্মীয় এবং সামাজিক বন্ধনকে এগিয়ে ধর্মীয় উগ্রবাদ, জঙ্গিবাদ, সহিংসতা ও সন্ত্রাসবাদকে প্রতিহত করার লক্ষ্যে চট্টগ্রাম নগরীর ষোলশহরস্থ এলজিইডি মিলনায়তনে আয়োজিত সম্প্রীতি সমাবেশে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক আরো বলেন, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট করতে যারা চেষ্টা করবে তাদেরকে বিন্দুমাত্র ছাড় দেওয়া হবে না। এদেশের জনগনকে সাথে নিয়ে দেশবিরোধী কর্মকান্ড কঠোর হস্তে দমন করা হবে। এ দেশে কোন অপশক্তি যাতে মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে না পারে সে ব্যাপারে সবাইকে সজাগ থাকতে হবে। এলাকায় কারা সন্ত্রাসী, জঙ্গি, উগ্রবাদী কিংবা অপকর্মের হোতা তাদেরকে নজরে রাখতে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদেরকে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে হবে। আইন-শৃংখলার অবনতি ঘটতে পারে এমন তথ্য পেলে তাৎক্ষনিক জানাতে হবে।
সমাবেশে চট্টগ্রাম জেলা পুলিশ সুপার এস.এম শফিউল্লাহ বলেন, সামাজিক সম্প্রীতি ছাড়া উন্নত বাংলাদেশ বিনির্মাণ সম্ভব নয়। শুধু দুর্গাপূজা নয়, কোন ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দেয়া যাবেনা। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রাখতে হবে। দুর্গোৎসব বা পুজামন্ডপ ঘিরে কেউ নাশকতার পরিকল্পনা করলে কিংবা উস্কানী দিলে তাদের বিরুদ্ধে তাৎক্ষনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে।
জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মো. বদিউল আলমের সঞ্চালনায় আয়োজিত সামাজিক সম্প্রীতি সমাবেশে বক্তব্য রাখেন জেলা সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ ইলিয়াছ চৌধুরী, মহানগর মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা মোজাফফর আহমদ, জেলার ভারপ্রাপ্ত কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা একেএম সরোয়ার কামাল দুলু, চট্টগ্রাম দক্ষিণজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. মফিজুর রহমান, উত্তরজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ আতাউর রহমান, রাউজান উপজেলা চেয়ারম্যান একেএম এহছানুল হায়দার চৌধুরী বাবুল, মিরসরাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মিনহাজুর রহমান, পটিয়া পৌর মেয়র মো. আইয়ুব বাবুল, মহানগর মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রেখা আলম চৌধুরী, বাঁশখালী থানার অফিসার ইনচার্জ মো. কামাল উদ্দিন, জেলা পূজা পরিষদের সভাপতি শ্যামল কুমার পালিত, বৌদ্ধ ধর্মীয় কল্যান ট্রাস্টের ট্রাস্টি মিথুন রশ্মি বড়ুয়া, আন্দরকিল্লা শাহী জামে মসজিদের পেশ ইমাম মাওলানা আনোয়ারুল আজহারী, লোহাগাড়ার বড় হাতিয়া ইউপি চেয়ারম্যান বিজয় কুমার বড়ুয়া প্রমুখ। চট্টগ্রামের বিভিন্ন উপজেলার জনপ্রতিনিধি, বীর মুক্তিযোদ্ধা, সরকারী কর্মকর্তা, ধর্মীয় নেতৃবৃন্দ, গণমাধ্যমকর্মী ও সুশীল সমাজের নেতৃবৃন্দ এসময় সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানের শুরুতে সন্ত্রাস ও জঙ্গীবাদমুক্ত বঙ্গবন্ধুর অসাম্প্রদায়িক সোনার বাংলা গড়ার লক্ষ্যে সবাইকে শপথবাক্য পাঠ করান জেলা প্রশাসক। সমাবেশ শেষে ষোলশহরস্থ এলজিইডি মিলনায়তন থেকে একটি সামাজিক সম্প্রীতি র্যালি বের করা হয়।
- মা.ফা