বিশ্ব ফুটবল সংস্থা ফিফা ভারতের ফুটবল নিয়ন্ত্রক সংস্থা অল ইন্ডিয়ান ফুটবল ফেডারেশন (এআইএফএফ)-কে আন্তর্জাতিক ফুটবল থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য নিষিদ্ধ করেছে।
ফিফা’র বিবৃতিতে বলা হয়েছে, এআইএফএফ-এর নানা সিদ্ধান্তে ‘তৃতীয়
পক্ষের অযাচিত প্রভাব’ থাকায় তারা এ পদক্ষেপ নিতে বাধ্য হচ্ছে। কারণ ফিফা যেসব মূলনীতির
ওপর ভিত্তি করে ফুটবল ফেডারেশনগুলো চালায় তার একটি হল, ফুটবল ফেডারেশনের উপর কোনোধরনের
আইনি বা সরকারি হস্তক্ষেপ থাকতে পারবে না।
অথচ ভারতীয় সুপ্রিম কোর্ট চলতি বছরের মে মাসে অল ইন্ডিয়ান ফুটবল
ফেডারেশনের কমিটি ভেঙে দিয়ে তিন সদস্যের একটি অস্থায়ী তত্ত্বাবধায়ক কমিটি গড়ে
দিয়ে এআইএফএফ-কে দ্রুত নির্বাচনের আদেশ দিয়েছিল, যা এখনও পালিত হয়নি।
এদিকে গত জুলাইয়ের মধ্যে সংস্থাটির আইনে প্রয়োজনীয় সংশোধনী আনা হবে
বলে ফিফাকে কথা দিলেও কার্যত তা বাস্তবায়ন করতে পারেনি এআইএফএফ। এ নিয়ে গত কয়েক
মাস ধরে টানাপোড়েন চলছিল ফিফা ও এআইএফএফ-এর মধ্যে
এ নিষেধাজ্ঞার ফলে সংস্থাটির গভর্নিং বডির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী,
ভারতে যেসব টুর্নামেন্ট আয়োজনের কথা ছিল সেগুলোর ভেন্যু পরিবর্তন করা হবে, এবং সেইসাথে
ভারতও যেসব টুর্নামেন্টে অংশ নেয়ার কথা সেখানে অংশ নিতে পারবে না।
চলতি বছরের অক্টোবর মাসে ভারতে অনূর্ধ্ব-১৭ নারী ফুটবল বিশ্বকাপ
আয়োজিত হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু এখন আর এ টুর্নামেন্টের আয়োজক দেশ থাকছে না ভারত।
আগামী ১১-৩০ অক্টোবর ভারতের বিভিন্ন রাজ্যের ভেন্যুতে এ টুর্নামেন্ট অনুষ্ঠিত
হওয়ার কথা ছিল।
ভারতের নারী ও পুরুষ জাতীয় দল এমনকি বয়সভিত্তিক দলগুলোও এখন কোনো
আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্টে অংশ নিতে পারবে না।
ভারতের ফুটবল ক্লাবগুলো এশিয়ান ফুটবল কনফেডারেশন্সের নারী ক্লাব
চ্যাম্পিয়নশিপ, এএফসি কাপ, এএফসি চ্যাম্পিয়ন্স লিগ-- এসব টুর্নামেন্টে অংশ নিতে
পারবে না।
তবে ভারতের জন্য সবচেয়ে বড় ধাক্কা হয়ে এসেছে এশিয়ান ফুটবল
কনফেডারেশন্স কাপ ২০২৩-এ অংশ নিতে না পারা।
ভারত ইতোমধ্যে এ কাপের বাছাইপর্বে উত্তীর্ণ হয়েছে। কিন্তু এখন ফিফার
অধীনে কোনো আন্তর্জাতিক ম্যাচে মাঠে নামতে পারবে না ভারত।
১৯৩৫-এ প্রতিষ্ঠিত এআইএফএফ ভারত সরকারের যুব ও ক্রীড়া
মন্ত্রণালয়ের অধীনে কাজ করে।
ফিফা ও এশিয়ান ফুটবল কনফেডারেশন্স ভারতের ফুটবল সংশ্লিষ্টদের সাথে
আলাপ করতে একটি দল পাঠিয়েছিল।
এশিয়ান ফুটবল কনফেডারেশন্সের মহাসচিব উইন্ডসর জন এ আলোচনায় এআইএফএফ-এর
সঙ্গে সম্মত হয়েছিলেন যে, জুলাই মাসের মধ্যে ফিফা'র দেখানো পথে ভারতের ফুটবলের আইন
সংশোধন করবে এবং সেপ্টেম্বর মাসের ১৫ তারিখের মধ্যে সকল নির্বাচন সম্পন্ন করা হবে।
ফিফার বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ভারতের যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের
সাথে তারা যোগাযোগ চালিয়ে যাচ্ছে, এবং আশা করছে সামনে আলোচনার ভিত্তিতে ইতিবাচক
কোনো পদক্ষেপ নিতে পারা যাবে।