সুদানে আটকে পড়া বাংলাদেশিদের সৌদি আরবের জেদ্দা হয়ে ফিরিয়ে
আনা হবে বলে জানিয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। ২৯ এপ্রিল শনিবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র সেহেলি
সাবরিন ঢাকায় বলেন, বাংলাদেশি নাগরিকদের খার্তুম থেকে পোর্ট সুদানে নিয়ে যাওয়া হবে
এবং সেখান থেকে জেদ্দায় নিয়ে যাওয়া হবে। জেদ্দা থেকে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের
বেশ কয়েকটি ফ্লাইটে তাদের দেশে ফিরিয়ে আনা হবে।
তিনি আরো বলেন, খার্তুমে বাংলাদেশ দূতাবাস ইতোমধ্যে বাংলাদেশি
নাগরিকদের খার্তুম ও পার্শ্ববর্তী শহরগুলো থেকে পোর্ট সুদানে নিয়ে যাওয়ার জন্য
নয়টি বাসের ব্যবস্থা করেছে। তাদের সহায়তার জন্য জেদ্দায় বাংলাদেশের কনস্যুলেট
জেনারেলের একটি দল সেখানে পৌঁছাবে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র সেহেলি সাবরিন আরো বলেন, আশা
করা হচ্ছে যে সুদানে আটকে পড়া সকল বাংলাদেশীকে ২ মে এর মধ্যে পোর্ট সুদানে নিয়ে
যাওয়া হবে এবং তারা ৩ মে থেকে ৪ মে এর মধ্যে জেদ্দায় পৌঁছানোর সম্ভাবনা রয়েছে।
জেদ্দার দুটি বাংলাদেশি স্কুলে সুদান থেকে আনা বাংলাদেশি নাগরিকদের জন্য খাবার,
পানীয়, ওষুধ এবং অস্থায়ী আবাসনের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
অন্যদিকে ২৯ এপ্রিল শনিবার এএফপি’র এক সংবাদ মাধ্যমে জানা
যায়, নতুন যুদ্ধবিরতি সত্ত্বেও সুদানের সেনাবাহিনী ও আধাসামরিক বাহিনীর মধ্যে লড়াই
তৃতীয় সপ্তাহে প্রবেশ করেছে এবং শনিবারও খার্তুমে যুদ্ধবিমানের বোমা হামলা ও বিমান
বিধ্বংসী গোলা নিক্ষেপ চলছিল।
সেনাপ্রধান আবদেল ফাত্তাহ আল-বুরহানের অনুগত বাহিনী এবং
আধাসামরিক র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেস (আরএসএফ)-এর নেতৃত্বে থাকা মোহাম্মদ হামদান
দাগলোর অনুগত বাহিনীর মধ্যে ১৫ এপ্রিল থেকে লড়াই শুরু হওয়ার পর সুদান বিশৃঙ্খলা ও
অনাচারে নিমজ্জিত হয়েছে।
বুরহান ও দাগলো সংঘর্ষের শুরু থেকে একাধিকবার যুদ্ধবিরতিতে
সম্মত হয়েছেন, কিন্তু কেউই কার্যকরভাবে তা বজায় রাখেননি, প্রতিটি পক্ষ যুদ্ধবিরতি
লঙ্ঘনের জন্য পরস্পর পরস্পরকে দোষারোপ করেছে। আরো দীর্ঘস্থায়ী যুদ্ধবিরতি নিশ্চিত
করার লক্ষ্যে জাতিসংঘের নেতৃত্বে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, সৌদি আরব, আফ্রিকান
ইউনিয়নের মধ্যস্থতার পরে বৃহস্পতিবার সর্বশেষ তিনদিনের যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয় তারা।
অর্ধকোটি লোকের বাসস্থান খার্তুম জুড়ে বাসিন্দাদের খাদ্য ও
পানির সরবরাহ বিপজ্জনকভাবে নিম্নস্তরে নেমে যাওয়া এবং বিদ্যুত ঘাটতি সত্ত্বেও
বেশিরভাগ লোকই বাড়িতে রয়েছেন।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মতে সংঘর্ষে এ পর্যন্ত কমপক্ষে ৫১২ জন
নিহত হয়েছে এবং ৪,১৯৩ জন আহত হয়েছে। তবে মৃতের সংখ্যা অনেক বেশি হতে পারে বলে
আশঙ্কা করা হচ্ছে। কয়েক হাজার সুদানী মিশর,
ইথিওপিয়া, সাদ ও দক্ষিণ সুদানসহ প্রতিবেশী দেশগুলিতে পালিয়ে গেছে। বিদেশী
নাগরিকদের ব্যাপকভাবে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।
জাতিসংঘ শুক্রবার বলেছে, তার শেষ আন্তর্জাতিক কর্মীকে দারফুর থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি বলেছে, ইতোমধ্যে দুর্ভিক্ষ প্রতিরোধে দেশটির জনসংখ্যার এক-তৃতীয়াংশ অর্থাৎ দেড়কোটি মানুষের সহায়তার প্রয়োজন। সহিংসতায় দেশটির আরও লাখ লাখ মানুষ ক্ষুধায় নিমজ্জিত হতে পারে।
- মা.ফা.