আন্তর্জাতিক ন্যায়বিচার আদালত (আইসিজে)-এ রোহিঙ্গা গণহত্যার বিচার প্রক্রিয়া নিয়ে মিয়ানমারের সামরিক জান্তার তোলা আপত্তি খারিজ হয়ে যাওয়ায় এ মামলার পূর্ণাঙ্গ শুনানির পথ উন্মুক্ত হয়েছে।
এর আগে, জাতিসংঘের এই সর্বোচ্চ
আদালতে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে মামলা করে আফ্রিকার দেশ গাম্বিয়া। এতে আপত্তি জানিয়ে মিয়ানমার
দাবি করছিল, এ মামলা করার এখতিয়ার গাম্বিয়ার নেই।
নেদারল্যান্ডসের দা হেগ-এ
অবস্থিত আন্তর্জাতিক ন্যায়বিচার আদালতে গত ২১ থেকে ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত এ বিষয়ে শুনানি
অনুষ্ঠিত হয়। এর ভিত্তিতে ১৩ জন বিচারকের একটি প্যানেল গতকাল ২২ জুলাই মিয়ানমারের আপত্তি
নাকচ করে দিয়ে সিদ্ধান্ত দেয় যে, গণহত্যা প্রতিরোধে ভূমিকা রাখা ১৯৪৮-এ আন্তর্জাতিক
গণহত্যা কনভেনশনে সই করা সকল দেশেরই দায়িত্ব। সেসব দেশ যখন কোথাও গণহত্যার অভিযোগ করবে,
জাতিসংঘ আদালতে তার ওপর শুনানি চলবে। গণহত্যা কনভেনশনে সই করা দেশ হিসেবে গাম্বিয়ার
অবশ্যই এ আদালতে মামলা করার এখতিয়ার রয়েছে।
বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে,
ইন্টারন্যাশনাল কোর্ট অব জাস্টিস এখন মিয়ানমারের বিরুদ্ধে গাম্বিয়ার মামলার পূর্ণাঙ্গ
শুনানির আয়োজন করবে, যা নিষ্পত্তিতে বহু বছর লেগে যাবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
মিয়ানমারে সেনা অভ্যুত্থানের
আগে দেশটির গণতন্ত্রপন্থী নেত্রী অং সান সু চি আন্তর্জাতিক আদালতে হাজির হয়ে রোহিঙ্গা
গণহত্যার ব্যাপারে মিয়ানমার রাষ্ট্রের কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই বলে জানিয়েছিলেন। পরিবর্তীত
পরিস্থিতিতে সেই সু চি এখন যাদের বিরুদ্ধে এই গণহত্যার অভিযোগ সেই সেনাবাহিনীর হাতে
এক নির্জন কারাগারে বন্দি রয়েছেন।
প্রসঙ্গত, ২০১৭ সালে মিয়ানমারের
রাখাইন রাজ্যে সেনা অভিযানের মুখে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর প্রায় ১১ লাখ মানুষ সীমান্ত সংলগ্ন
বাংলাদেশের কক্সবাজার জেলায় পালিয়ে আশ্রয় নেয়। তারপর থেকে কয়েকদফা প্রত্যাবাসনের উদ্যোগ
নেওয়া হলেও মিয়ানমারের সদিচ্ছার অভাবে তা আলোর মুখ দেখেনি।