মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দুজন আইনপ্রণেতা
দেশটির প্রতিনিধি সভা বা হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভস-এ প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনকে ১৯৭১-এ
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর নৃশংসতাকে গণহত্যা হিসাবে
স্বীকৃতি দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে একটি আইনের প্রস্তাব উপস্থাপন করেছেন।
কংগ্রেসম্যান স্টিভ শ্যাবট ও ভারতীয়
বংশোদ্ভূত কংগ্রেসম্যান রো খান্নার মার্কিন হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভস-এ ‘১৯৭১ সালে বাঙালি ও হিন্দুদের বিরুদ্ধে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর নৃশংস কর্মকাণ্ড
মানবতা বিরোধী অপরাধ, যুদ্ধাপরাধ ও গণহত্যা হিসাবে ঘোষণা করার জন্য এ আইন পেশ করেন।
শুক্রবার শ্যাবোট টুইট করেন, “ওহাইওর ফার্স্ট ডিস্ট্রিক্টে আমার হিন্দু ভোটারদের সহায়তায় রিপ্রেজেন্টেটিভস
রো খান্না এবং আমি বাঙালি ও হিন্দুদের ওপর সংঘটিত বিশেষ করে গণনৃশংসতা যে একটি গণহত্যা
ছিল, তা স্বীকৃতি দেওয়ার দাবিতে আইন প্রস্তাব উপস্থাপন করেছি।”
তিনি বলেন, ১৯৭১-এর বাংলাদেশ গণহত্যা
ভুলে যাওয়া যাবে না। কংগ্রেসম্যান বলেন, গণহত্যাকে স্বীকৃতি দান ঐতিহাসিক রেকর্ডকে
জোরদার করাটা “আমাদের আমেরিকাবাসীদের শিক্ষিত
করে তোলে এবং অপরাধীদের জানান দেয় যে, এধরনের অপরাধ সহ্য করা হবে না বা ভোলা হবে না”।
তিনি বলেন, “বহুবছর অতিবাহিত হলেও গণহত্যার শিকার লাখো মানুষের স্মৃতি মুছে যেতে দেওয়া উচিত
নয়।”
খান্না বলেন, তিনি ১৯৭১ সালের
বাঙালি গণহত্যার স্মরণে প্রথম প্রস্তাব পেশ করতে পারার জন্য শ্যাবোটের সাথে যোগ দিতে
পেরে গর্বিত। তিনি বলেন, “আমাদের সময়ের
সবচেয়ে বিস্মৃত এ গণহত্যায় লাখ লাখ জাতিগত বাঙালি এবং হিন্দু নিহত বা বাস্তুচ্যুত হয়েছিল।”
‘বাংলাদেশের
১৯৭১-এর গণহত্যার স্বীকৃতি’ শিরোনামের
আট পৃষ্ঠার ওই প্রস্তাবে সুস্পষ্ট প্রমাণের মুখে পাকিস্তান সরকারকে এধরনের গণহত্যায়
তাদের ভূমিকা স্বীকার করার এবং বাংলাদেশের সরকার ও জনগণের কাছে আনুষ্ঠানিক ক্ষমা চাওয়ার
এবং কোনো অপরাধী এখনও জীবিত থাকলে আন্তর্জাতিক আইন অনুসারে তার বিচার করার আহ্বান জানানো
হয়েছে।
প্রস্তাবিত এ আইনে ১৯৭১-এর মার্চ
থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত বাংলাদেশের জনগণের বিরুদ্ধে সংঘটিত পাকিস্তানি সশস্ত্র বাহিনীর
নৃশংসতার নিন্দা করা হয়েছে। স্বীকার করা হয়েছে, বাঙালি ও হিন্দুদের বিরুদ্ধে এধরনের
নৃশংসতা মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ, যুদ্ধাপরাধ ও গণহত্যা। এধরনের নৃশংসতার অগণিত শিকারের
মৃত্যু ও যন্ত্রণার কথা স্মরণ করে এ আইনের প্রস্তাবে তাদের দুর্ভোগের প্রতি গভীর সমবেদনা
প্রকাশ করা হয়েছে।
এতে আরো বলা হয়েছে, এই প্রস্তাবিত আইন ভারত মহাসাগরীয়-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে শান্তি, স্থিতিশীলতা এবং আন্তঃসাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বৃদ্ধিতে মার্কিন অঙ্গীকার এবং জাতি, বর্ণ, গোষ্ঠী বা ধর্মীয় পটভূমি নির্বিশেষে এ অঞ্চলে বসবাসকারী সকল মানুষের গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান, আইনের শাসন, ধর্মীয় স্বাধীনতা এবং অর্থনৈতিক সুযোগ-সুবিধা ভোগ করার অধিকারকে পুনর্ব্যক্ত করছে।