‘নিরাপদ’ ভেবে গাজায় আল-আহলি আরব নামের একটি হাসপাতালে আশ্রয় নেয় ফিলিস্তিনে ইসরায়েলি হামলায় আহত শত শত রোগী ও অসংখ্য গৃহহীন মানুষ। কিন্তু ১৭ অক্টোবর মঙ্গলবার রাতে ওই হাসপাতালে ইসরায়েলের বোমা হামলায় নিহত হয় ৫০০ জন।
এএফপি’র সংবাদ মাধ্যমে আরো জানা যায় হামাস-নিয়ন্ত্রিত গাজা উপত্যকার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, হাসপাতালে বোমা হামলায় অন্তত ৫০০ জন নিহত হয়েছেন। ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়ে রয়েছে অরো অনেকে মানুষ। হামলার ঘটনায় নিহত মানুষের সংখ্যা আরো বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে।
বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশিত ছবিতে দেখা যায়, বিস্ফোরণের পর হাসপাতালের বহুতল ভবনটি জ্বলছে। চারপাশে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছে অসংখ্য মরদেহ। আর ধ্বংসস্তূপ থেকে ভেসে আসছে আহত মানুষের আর্তচীৎকার।
১৭ অক্টোবর মঙ্গলবার স্থানীয় সময় রাত সাড়ে আটটার দিকে (বাংলাদেশ সময় সাড়ে রাত ১১টা) হাসপাতালে একাধিক বিস্ফোরণ হয়। হাসপাতালে বেসামরিক নাগরিকদের ওপর এই হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে জাতিসংঘসহ মানবাধিকার ও আন্তর্জাতিক দাতব্য সংস্থাগুলো। মধ্যপ্রাচ্যসহ বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রপ্রধানও এ হামলার নিন্দা জানাচ্ছেন।
হাসপাতালে ইসরায়েলি বাহিনীর বর্বরোচিত বিমান হামলায় ৫ শতাধিক লোকের প্রাণহানির কারণে ১৭ অক্টোবর মঙ্গলবার তিন দিনের গভীর শোক ঘোষণা করেছেন ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস।
ফিলিস্তিনের সরকারি বার্তা সংস্থা ওয়াফা পরিবেশিত খবরে বলা হয়, আব্বাস এ ঘটনায় তিন দিনের সরকারি শোক ঘোষণা করেছেন এবং হাসপাতালে গণহত্যার শহীদদের ও ফিলিস্তিনের সকল শহীদের জন্য জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত রাখার নির্দেশ দিয়েছেন।
অন্যদিকে হাসপাতালে ইসরায়েলের বোমা হামলার জেরে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সঙ্গে পূর্বনির্ধারিত বৈঠক বাতিল করেছেন আরব নেতারা। জর্ডানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আয়মান সাফাদি বলেছেন, ১৮ অক্টোবর বুধবার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এবং মিশরীয় ও ফিলিস্তিনি নেতাদের সাথে গাজা নিয়ে আলোচনার জন্য আম্মানে আয়োজিত একটি শীর্ষ সম্মেলন বাতিল করেছে জর্ডান। তিনি বলেন, এই বৈঠক তখনই অনুষ্ঠিত হবে যখন ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ এবং গণহত্যা বন্ধ হবে।
আজ বুধবার ইসরায়েল সফরে যাওয়ার কথা বাইডেনের। ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাসের সঙ্গে চলমান সংঘাতের পরিপ্রেক্ষিতে মিত্র ইসরায়েলের প্রতি সমর্থন জানানোর অংশ হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী, প্রতিরক্ষামন্ত্রী ও শীর্ষ প্রতিরক্ষা কর্মকর্তাদের পর এবার তেল আবিব সফরে যাচ্ছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট।
ইসরায়েল সফর শেষে জর্ডানের রাজধানী আম্মানে যাওয়ার কথা ছিল বাইডেনের। সেখানে জর্ডানের বাদশাহ আবদুল্লাহ, মিসরের প্রেসিডেন্ট আবদেল ফাত্তাহ আল-সিসি ও ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসের সঙ্গে বৈঠকের কথা ছিল মার্কিন প্রেসিডেন্টের। তবে জর্ডান জানিয়ে দিয়েছে, বাইডেনের সঙ্গে তিন আরব নেতার যে নির্ধারিত বৈঠক হওয়ার কথা ছিল, তা আর হচ্ছে না। গাজার হাসপাতালে হামলার প্রতিবাদে জর্ডান বাইডেনের সঙ্গে নির্ধারিত এ বৈঠক বাতিল করেছে।
অবশ্য জর্ডানের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেওয়ার আগেই বাইডেনের সঙ্গে পূর্বনির্ধারিত বৈঠক বাতিলের ঘোষণা দেন ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস।
- মা.ফা.