মস্কোতে একটি ঐক্যফ্রন্ট গঠন করে চীন ও রাশিয়ার নেতারা তাদের
সম্পর্কের ‘নতুন যুগকে’ স্বাগত জানিয়েছেন। ২১ মার্চ
মঙ্গলবার এএফপি’র সংবাদ মাধ্যমে এ তথ্য জানা যায়। এতে আরো বলা হয়েছে ইউক্রেন
সংঘাত অবসানে বেইজিংয়ের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করায় পশ্চিমাবিশ্বকে দায়ী করেছেন
রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।
পুতিন বলেন, তিনি ইউক্রেনের বিষয়ে আলোচনার জন্য উন্মুক্ত
ছিলেন এবং সংঘাতের বিষয়ে বেইজিংয়ের ১২ দফা প্রস্তাবপত্রের প্রশংসা করেছেন যার
মধ্যে সংলাপ এবং সকল দেশের আঞ্চলিক সার্বভৌমত্বের প্রতি সম্মান জানানোর কথা বলা
হয়েছে।
চীনের নেতা শি জিনপিংয়ের সাথে আলোচনার পর পুতিন বলেন, ‘চীনের প্রস্তাবিত শান্তি
পরিকল্পনার অনেক বিধান একটি শান্তিপূর্ণ মীমাংসার ভিত্তি হিসেবে গ্রহণ করা যেতে
পারে যখন কিয়েভ এবং পশ্চিমারা এর জন্য প্রস্তুত হবে। তবে এখন পর্যন্ত আমরা তাদের
পক্ষ থেকে এমন কোন প্রস্তুতি দেখিনি।’
আলোচনার পর রাষ্ট্রীয় এক নৈশভোজে পুতিন বলেন, ‘আমি নিশ্চিত যে
রাশিয়া-চীন সহযোগিতার সত্যিই সীমাহীন সম্ভাবনা রয়েছে।’ সেখানে তিনি রাশিয়া
ও চীনের জনগণের ‘সমৃদ্ধির’ কথা তুলে ধরেন।
মস্কো সফরের দ্বিতীয় দিনে শি বলেন, রাশিয়ার সাথে চীনের
সম্পর্ক ‘নতুন যুগে প্রবেশ করছে।’ পুতিন আলোচনাকে ‘অর্থপূর্ণ এবং খোলামেলা’ বলে অভিহিত করে আরো
বলেন, নিষেধাজ্ঞা আরোপের কারণে ইউরোপীয় বাজার থেকে অনেকাংশে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়া
রাশিয়া জ্বালানি পাওয়ার ক্ষেত্রে চীনের ‘ক্রমবর্ধমান চাহিদা’ মেটাতে সক্ষম
হবে।
এদিকে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেছেন,
কিয়েভ চীনকে আলোচনার আমন্ত্রণ জানিয়েছে এবং তারা বেইজিংয়ের উত্তরের অপেক্ষায়
রয়েছে। জেলেনস্কি এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘আমরা চীনকে শান্তির
ফর্মুলা বাস্তবায়নে অংশীদার হওয়ার প্রস্তাব দিয়েছি। আমরা সকল চ্যানেলে আমাদের
ফর্মুলাটি বলে দিয়েছি। আমরা আপনাকে সংলাপের জন্য আমন্ত্রণ জানাচ্ছি। আমরা আপনার
উত্তরের জন্য অপেক্ষা করছি।’
এদিকে যুক্তরাষ্ট্র বলেছে, চীন একটি নিরপেক্ষ মধ্যস্থতাকারী
হতে সক্ষম হবে বলে ওয়াশিংটন মনে করে না। এ সংঘাত অবসানের প্রচেষ্টায় মধ্যস্থতাকারী
হওয়ার বেইজিংয়ের এমন লক্ষ্যের কঠোর সমালোচনা করেছে যুক্তরাষ্ট্র।
বিগত বছরগুলোতে মস্কো ও বেইজিং তাদের মধ্যে সহযোগিতা বৃদ্ধি
করেছে এবং উভয় দেশ মার্কিন আধিপত্যকে প্রতিহত করার ইচ্ছা পোষণ করে।
চীনের নেতার মস্কো সফরকে পুতিনের জন্য একটি বলিষ্ঠ পদক্ষেপ
হিসেবে দেখা হচ্ছে। কারণ, পুতিনের বিরুদ্ধে ইউক্রেনের শিশুদের বেআইনিভাবে
নির্বাসনের অভিযোগে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের পরোয়ানা রয়েছে।
এদিকে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি মঙ্গলবার
বলেছেন, তিনি জাপানের প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদার কিয়েভ সফরকালে তার সাথে ‘ফলপ্রসূ আলোচনা’ পরিদর্শন করেন।
তিনি ইউক্রেনের বুচা শহর সফর করেন। সেখানে রাশিয়ার বাহিনীর এক বছরের দখলদারিত্ব
চলাকালে নৃশংসতা চালানোয় তাদেরকে অভিযুক্ত করা হয়।
জেলেনস্কি তার সান্ধ্যকালীন ভাষণে বলেন, ‘মি. কিশিদার সাথে আমাদের আলোচনা বেশ ফলপ্রসূ ছিল।’ তিনি বলেন, ‘রাশিয়ার আগ্রাসন এবং সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে সুরক্ষার জন্য আন্তর্জাতিক শৃঙ্খলা রক্ষায় বিশ্বকে আরো সক্রিয়ভাবে সংগঠিত করতে আমাদের সাথে একত্রে কাজ করার জন্য আমি জাপানের অত্যন্ত সুনির্দিষ্ট ইচ্ছার কথাও শুনেছি।’
- মা.ফা.